ধর্ষকের হুমকিতে কন্যাকে নিয়ে ভিটেছাড়া দীনমজূর পিতা

ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা অতঃপর গর্ভের সন্তান সুকৌশলে নষ্ট করে ধর্ষকের হুমকিতে দিশেহারা হয়ে অসহায় পিতা কন্যাকে নিয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

বর্তমানে ভিটেছাড়া হয়েছেন ধর্ষিতার পিতা ও কন্যা। শেষ পর্যন্ত দ্বারস্থ হয়েছেন সংবাদকর্মীদের।

সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অসহায় পিতা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেছেন। ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন যশোর জেলার সাগরদাড়ি এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের আবুল হোসেন খার ছেলে আব্দুল আলিম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার চাচাতো ভাইয়ের লম্পট, বহু বিবাহের নায়ক মাদকাসক্ত পুত্র কর্তৃক ১৪ বছরের কন্যাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ এবং উল্টো খুন, জখমের হুমকি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি একজন অসহায় সহায় সম্বলহীন কৃষক। অন্যের জমি ভাগে (বর্গা) নিয়ে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আমার স্ত্রী আমার ২ সন্তান রেখে গত ৪ বছর পূর্বে আমার সংসার ছেড়ে চলে যায়। এরপর থেকে আমি ওই দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করি।

আর্থিক অনটনের কারণে বড় কন্যা (বড় খুকি ছদ্মনাম) পড়াশোনা বন্ধ করে দেই। আমি কাজের জন্য মাঠে গেলে বড় কন্যা সাংসারিক কাজকর্ম করত। কাজ কর্ম শেষে পাশর্^বর্তী আমার চাচাতো ভাই মাজিদ খাঁর বাড়িতে যেয়ে টিভি দেখতো। ওই চাচাতো ভাইয়ের বড় ছেলে লম্পট, বহুবিবাহের হোতা আলমগীর হোসেন বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আমার কন্যাকে জোরপূর্বক পর পর দুইবার ধর্ষণ করে।

আমার কন্যা বিষয়টি ওই লম্পটের মাতা আকলিমা খাতুনকে জানালে আকলিমা (চাচাতো ভাবী) আমার কন্যাকে বলে এ বয়সে এরকম একটু হয়। এরপর থেকে আমার কন্যা তাদের বাড়িতে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ওই লম্পট আলমগীর কর্তৃক ধর্ষিত হয়ে আমার কন্যা অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

কিন্তু আমার কন্যার মা না থাকায় এবং আমি পিতা হওয়ায় লজ্জায় সে আমার সাথে এসবের কোন কিছুই জানাই নি। অন্তস্বত্ত্বা হওয়ার পর কন্যা ওই চাচী নামের কলঙ্ক আকলিমাকে জানালে গত ২২/০২/২০১৯ তারিখ শুক্রবার আকলিমা আমার কন্যাকে বেড়ানোর নাম করে কেশবপুর এলাকার একটি ক্লিনিকে নিয়ে পানির সাথে ঔষধ খাওয়ায়ে দেন।

এরপর থেকে আমার কন্যা মারাত্মক পেটব্যাথা শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর রক্ত ও পানির সাথে তার পেটের ভ্রুনটি নষ্ট হয়ে যায়। সেখান থেকে ফিরে এসে এলাকাবাসীর সাথে প্রচার দেয় যে আমার অবিবাহিত কন্যার পেটের বাচ্চা নষ্ট করে তারা। তখন আমি আমার কন্যার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে সে বিস্তারিত আমাকে খুলে বলে। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মহলকে অবহিত করি। এরপর লম্পটের বড় চাচা রেজাউল খাঁ আমাকে বিষয়টি থানা পুলিশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন আমি বিষয়টির সমাধান করে দেবো। কিন্তু তারা রেজাউল খাঁ কথামত সমাধানে রাজি না হয়ে আমার ও আমার কন্যাকে খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে বলে, আমাদের নামে মামলা করে কিছুই করতে পারবি না। আর মামলা করে বাড়ি ফিরলে দা দিয়ে কুপিয়ে ভাগিয়ে দেবো। লম্পট আলমগীর ইতোপূর্বে ৩টি বিবাহ করেও তাদের সাথে সংসার করতে পারেনি। বর্তমানে ৪নং বিবাহ করলেও তার সাথে গোলযোগ চলছে।

কিন্তু টাকা এবং প্রভাব খাটিয়ে উল্টো তারা আমাদের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করছেন। আমি এখন এই মা হারা কন্যাকে নিয়ে কোথায় যাবো-? কার কাছে যাবো, কোথায় গেলে এর সঠিক বিচার পাবো-? আমি ওই লম্পট আলমগীর ও নারী নামের কলঙ্ক কুচক্রী আকলিমার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে যশোর পুলিশ সুপার মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)