ভারত কি ঐক্যফ্রন্টে ঝুঁকেছে?

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপর ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ বেড়েছে। বিশেষ করে কাদের সিদ্দিকী ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেওয়ার পর, ভারতীয় দূতাবাসের নানা কর্মকর্তা ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন বড় প্রশ্ন হলো, ভারত কি ঐক্যফ্রন্টে ঝুঁকেছে?

মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটের বিদায়ের পর, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর তেমন আগ্রহ নেই। নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত এখনো বাংলাদেশে আসেননি। মার্কিন দূতাবাস মনে করছে, সব রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, এটা বড় অর্জন। মার্কিন দূতাবাস মনে করছে, অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনই সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান পূর্বশর্ত।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনায় এখন আর আগ্রহী নয় মার্কিন দূতাবাস। তারা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে কিনা, সে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে চায়। মার্কিন দূতাবাসের মতোই অবস্থান যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের। এই দেশগুলো এখন নীরব পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় থাকলেও, ভারতের সরব তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। গত এক সপ্তাহে ভারতীয় দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্তত পাঁচ নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন বলে নিশ্চিত খবর পাওয়া গেছে। যাদের সঙ্গে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে, তাঁরা হলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ. স. ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না এবং বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। এদের অন্তত দুজন নেতা বাংলা ইনসাইডারের কাছে এ ধরনের বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন। এদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যেহেতু ঐক্যফ্রন্ট সম্পূর্ণ নতুন জোট। আমাদের বিশ্বাস এবং আদর্শের জায়গাগুলো তাঁরা পরিষ্কার হতে চেয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থান তাদের করছি।’ জানা গেছে, ক্ষমতায় গেলে ঐক্যফ্রন্ট কী করবে, কীভাবে সাজাবে ক্ষমতার ভারসাম্য ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভারতীয় দূতাবাস নানা খুঁটিনাটি প্রশ্ন ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের করছেন। শুধু প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, এটা নয়, ক্ষমতায় গেলে ২০ দলের কি হবে, কীভাবে সরকার চলবে, বেগম জিয়া ও তারেক জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হবে-ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তাঁরা মত নিচ্ছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের।

প্রশ্ন উঠেছে, ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপারে ভারতের এত আগ্রহ কেন?  ভারত কি ঐক্যফ্রন্টের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে? আওয়ামী লীগ নেতারা অবশ্য তেমনটা মনে করেন না। বরং আওয়ামী লীগ মনে করছে, ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক অন্য যে কোনো সময়ের চেয়েও দৃঢ়। কিন্তু কূটনৈতিক সূত্রের খবর হলো, ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনে আনতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ভারত। ৭ দফার কোনো দফা না মানার পর বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের প্রায় সবাই নির্বাচনের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু ভারতীয় দূতাবাসের অনুরোধে তারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে। ঐক্যফ্রন্টের একজন নেতা বলেছেন, শুধু ভারত নয়, সব বিদেশি রাষ্ট্র এবং বন্ধুরা আমাদের গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)