বেলা ১১টা পর্যন্তও খোলা হলো না কলারোয়ার বোয়ালিয়া কলেজ
কলেজ চলাকালীন সময়ে কলেজ তালাবদ্ধ! কর্মদিবসের কর্মঘন্টায় এরূপ অবস্থায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দরখাস্ত দেয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে।
ঘটনাটি ঘটেছে, কলারোয়ার বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভূক্তভোগিরা জানান- কলেজটি ডিগ্রি পর্যায়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অধিভূক্ত ও অনুমোদিত। উচ্চ-মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত এমপিওভূক্ত হলেও এখানো ডিগ্রি পর্যায় এমপিওভূক্ত হয়নি। ডিগ্রির ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মচারী বুধবার সকাল ৯টার দিকে কলেজে এসে দেখেন কলেজের মূল ভবনে ঢোকার ক্লপসিপল গেটে তালা তখনো খোলা হয়নি। করতে থাকেন অপেক্ষা। ঘড়ির কাটা পৌছুলো ১০টায়। নির্ধারিত দিনের দায়িত্বশীল কেউ-ই তখনো কলেজ সময়েও আসলো না। সেসময় একে একে চলে আসলেন ডিগ্রি স্তরের শিক্ষকরা। তবু গেট বন্ধ। তালার চাবির কোন সন্ধান নেই। যথারীতি অধ্যক্ষের ইচ্ছামাফিক অনুপস্থিতি। ডিগ্রির ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মচারীদের পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন শিক্ষকরাও।
মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলো অধ্যক্ষের কাছে। নম্বর বন্ধ। তখন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির কাছে ফোন দেয়া হলে তিনি জানালেন- ‘বিষয়টি দূ:খজনক।’
কলেজের চাবির দায়িত্বে থাকা উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ের কর্মচারী শফিকুল যার বাড়ি কলেজের একেবারে পাশে তার কাছে মোবাইল ফোনে তালা খুলে দিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলে তিনি জানালেন- ‘পারলে নিয়ে যান।’ ঘড়ির কাটা তখন সাড়ে ১০টা।
জানা গেলো- বেলা দেড়টার সময় কলেজের উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষা হওয়ার আগে কলেজ গেটের তালা খোলা হবে।
দায়িত্বশীলদের চরম দায়িত্বহীনতা আর উদাসিনতায় বিষ্ময় প্রকাশ করে কলেজের একজন শিক্ষক মোবাইলে ফোন দিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল হামিদের কাছে। তিনি জানালেন- ‘অধ্যক্ষকে জানান, আমি কী করবো?’
নিরুপায় ও বিষ্মিত হয়ে বিষয়টি অবগত করার জন্য ফোন দেয়া হলো উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে। তিনি মনোযোগ সহকারে ঘটনাটি শুনলেন। তখন বেলা পৌনে ১১টা বেজে গেছে। ছাত্র-ছাত্রীরা অধৈর্য্য হয়ে চলে যেতে শুরু করেছে ততক্ষনে।
শিক্ষকরা বলে দেয়ার পর চাবির দায়িত্বে থাকা পিওন শফিকুলের বাড়ি থেকে ডিগ্রির একজন পিয়ন চাবি এনে যখন কলেজের মূল ভবনে ঢোকার গেটের তালা খুললো তখন বেলা ১১টা। পরপরই পিওন শফিকুল যিনি অধ্যক্ষের সবচেয়ে কাছের বলে বিবেচিত তিনি কলেজে এসে আপত্তিকর মন্তব্য ছুড়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূল আচরণও করলেন। পুরো বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ ও কষ্টে বিষয়টি অবগত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে যৌথ স্বাক্ষরে দরখাস্ত দিয়েছেন ডিগ্রির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা।
সংশ্লিষ্টরা ক্ষোভের সাথে জানিয়েছেন- সরকারি ছুটি নয়, এমনদিনে নিদেনপক্ষে কলেজের অফিস খোলা রাখা নিয়মের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সপ্তাহের বেশিরভাগ কর্মদিবসে অধ্যক্ষ থাকেন অনুপস্থিত কিংবা কলেজ সময়ে কলেজে অবস্থান করেন না। প্রায় নিয়মিতভাবে অনিয়ম আর অব্যবস্থানপার জেরে বুধবার সরকারি ছুটি না হয়েও বেলা ১১টা পর্যন্ত কলেজ বন্ধা রাখার বিষয়টি দেখবে কে কিংবা এ বিষয়ে কি কোন প্রতিকার নেই?