আবুল মনসুর আহমদের ১২০তম জন্মদিন আজ
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদের ১২০তম জন্মদিন আজ (৩ সেপ্টেম্বর)। তিনি ১৮৯৮ সালের এ দিনে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ধানীখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্রুপাত্মক রচয়িতা আবুল মনসুর আহমদ ছিলেন একাধারে প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। তিনি ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলার কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘ইত্তেহাদ’এর সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তৎকালীন ‘কৃষক’ ও ‘নবযুগ’ পত্রিকায়ও কাজ করেছেন তিনি। তিনি ছিলেন আধুনিক ও প্রগতিশীল সাংবাদিকতার অগ্রপথিক।
অত্যন্ত সফল রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদ শের-এ-বাংলা এ কে ফজলুল হকের যুক্তফ্রন্ট সরকারে প্রাদেশিক শিক্ষামন্ত্রী এবং ১৯৫৭ সালে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির আওয়ামী লীগ সরকারে ছিলেন কেন্দ্রিয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী। পূর্ববাংলার স্বার্থের স্বপক্ষে শক্ত অবস্থান ও নানাবিধ উদ্যোগ বিশেষ করে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য।
তার রচনা সম্ভারের মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত বিদ্রুপাত্মক রচনা ‘আয়না’, ‘আসমানী পর্দা’, ‘গালিভারের সফরনামা’ ও ‘ফুড কনফারেন্স’। আরও রয়েছে বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের উপর বিখ্যাত রচনাবলী। তার আত্মজীবনীমূলক দু’টি গ্রন্থ হচ্ছে ‘আত্মকথা’ ও ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’।
আবুল মনসুর আহমদ চল্লিশ, পঞ্চাশ ও ষাটের দশক জুড়ে ধর্মনিরপেক্ষতার স্বপক্ষে যে অবিরাম প্রচারণা চালিয়েছিলেন তা তুলনাহীন। পাকিস্তানের প্রথম দিকে বিরোধী দলীয় আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা।
তিনি চল্লিশের দশকের প্রথম থেকেই ভাষা বিষয়ে লিখে আসছিলেন এবং ‘ইত্তেহাদ’ সম্পাদক হিসেবে ভাষা আন্দোলনে গভীর অবদান রাখেন। আবুল মনসুর আহমদ ১৯৫৪’র নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট (বাঙ্গালীর রাজনীতির তিন জাঁদরেল ব্যক্তিত্ব শের-এ-বাংলা ফজলুল হক, মাওলানা ভাষানী ও শহীদ সোহরাওয়ার্দির মহাসমন্বয়) এর মেনিফেস্টো ‘একুশ দফা’র রচয়িতা, যে নির্বাচনে মুসলিম লীগকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়।
উল্লেখ্য, ৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ অডিটরিয়ামে আবুল মনসুর আহমদ প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার পুরস্কার ও জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। আবুল মনসুর আহমদের প্রাসঙ্গিকতা সাহিত্যে, সাংবাদিকতায় ও রাজনীতিতে। তিন বিভাগে একজন ছেলে একজন মেয়েসহ মোট ছয়জন পাচ্ছেন দশ হাজার টাকা করে ৬০ হাজার টাকা। অনুরূপভাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ছয়জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে ৩০ হাজার টাকার বই দেয়া হবে।