বেনাপোলে পরিবহনের টিকেট সোনার হরিণ ভারত ফেরত যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ

পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে প্রতিবেশী দেশ ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে পড়েছে চরম দূর্ভোগে। যাত্রীবাহী বাসের টিকিট না পেয়ে শত শত যাত্রী নানা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে যশোরের বেনাপোল সীমান্তে। বেনাপোল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা সহ অন্যান্য স্থানের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় ভারত থেকে আসা যাত্রীরা পড়েছে চরম বিপাকে। ঢাকা ও অন্যান্য স্থান থেকে ঈদ করতে এসে আটকা পড়েছে শত শত স্থানীয় কর্মজীবীরাও।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেনাপোলের বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার ঘুরে দেখা যায়, ঢাকামুখী শত শত যাত্রী বাসের টিকিট না পেয়ে বিকল্প উপায় খুঁজছে। কেউ মাইক্রোবাস, কেউ বা প্রাইভেট কার নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হওয়ার চেষ্টা করছে। অনেকে আবার ভেঙ্গে ভেঙ্গে বিভিন্ন যানবাহনে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে।
সোহাগ পরিবহনের বেনাপোল কাউন্টারের ব্যবস্থাপক সহিদুল ইসলাম জানান, ‘অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ থাকায় অতিরিক্ত গাড়ি দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশ্বাসও পেয়েছি। ’দেশ ট্রাভেলস পরিবহনের কাউন্টারে ভারত থেকে আসা যাত্রী রাজধানীর চকবাজরের নাজমুল ইসলাম বলেন, তাঁরা সকালে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন। কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় ঢাকায় ফিরতে পারছেন না।
নাজমুল ইসলামের মতো ভারত থেকে ফিরে বেকায়দায় পড়েছে রাজধানীর শাঁখারিবাজারের অমরথ, উজ্জল কুমার, সুকুমার, বাড্ডার আলী হোসেন ও তাঁর স্ত্রী নাদিয়া সুলতানাসহ আরো অনেক যাত্রী।

ঢাকার আলুবাজারের রাতুল হোসেন বলেন, ‘বহুবার ভারত গিয়েছি। কিন্তু বেনাপোলে এসে এমন সমস্যায় কখনো পড়েনি। সব কাউন্টার ঘুরেছি, কোথাও কোনো টিকিট পেলাম না। ’সাভারের একটি রপ্তানিমুখী সোয়েটার কারখানার অপারেটর বেনাপোলের গয়ড়া গ্রামের গৃহবধূ রুবিনা বেগম বলেন, ‘শনিবার সকালে আমাকে কাজে যোগ দিতে হবে। কিন্তু যাওয়ার জন্য কোনো টিকিট পাচ্ছি না। একটি পরিবহনের ম্যানেজারকে অনেক অনুরোধ করেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, দেখি কী হয়!’ দেশ ট্রাভেলসের ডেস্ক কর্মকর্তা মোঃ হাসান জানান, হঠাৎ করে যাত্রীর চাপ বেড়ে গেছে। অনেক যাত্রী বাসের টিকিট না পেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কার ভাড়া করে ঢাকা যাচ্ছে। ঢাকার একটি ব্যাংকে চাকরি করা বেনাপোলের বড়আঁচড়া গ্রামের শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘ঢাকার যানজট, কর্মব্যস্ততা সব মিলিয়ে এই যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার জন্যই ঈদের ছুটিতে গ্রামে এসেছিলাম। আগেভাগেই ফেরার জন্য দুই দিন ঘুরেও কোনো টিকিট পাইনি। ‘ঈগল পরিবহনের বেনাপোল কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক রাশেদুর রহমান বলেন, ‘আগামী শনিবার পর্যন্ত সব পরিবহনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

স্থানীয় অনেক যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন যে বেনাপোলে যাএীবাহী বাসের টিকেট পাওয়া যেন সোনার হরিণ। কাউন্টারগুলো অনেক সময় মুখ দেখে টিকেট দেয়, তারা আরও বলেন তাদের নির্ধারিত ভাড়া ছাড়া অতিরিক্ত কিছু বেশী অর্থ দিলে টিকেট পাওয়া যায়।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, আগে গড়ে যেখানে দুই থেকে আড়াই হাজারের মতো যাত্রী যাতায়াত করত, এখন ভারত থেকে প্রতিদিন দুই হাজার যাত্রী আসছে। একসঙ্গে এত যাত্রী আসার কারণে পরিবহনে টিকিট প্রাপ্তিতে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)