সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে এক সপ্তাহ বিদ্যুৎ ও পানি নেই

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গত এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। বিশেষ করে সে সব রোগী আগে অপারেশন হয়েছেন তারা পড়েছে আরও চরম বিপাকে। এদিকে জেলা শহরের দুর দুরান্ত থেকে অপারেশন করতে আসা অসহায় ও গরীব রোগীরা সদর হাসপাতালের দুরবস্থা দেখে ফিরে যাচ্ছে। বিশেষ করে চরম বিপাকে পড়েছে সিজারিয়ান রোগীরা। সিজারিয়ান মা ও নবজাতক বাচ্চা অসহনীয় গরমে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। দেখা দিচ্ছে নানাবিধ রোগ। এদিকে বিদ্যুতের পাশাপাশি পানি না থাকায় হাসপাতালে পরিবেশ দূষণ দেখা দিয়েছে। নিচ থেকে পানি নিয়ে রোগীদের বাথরুম ও অন্যান্য কাজ সারতে হচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেফালি খাতুনের স্বামী মহব্বত আলি জানান গত তিনদিন আগে তার স্ত্রীকে সিজার করার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বিদ্যুৎ নেই। তোমার স্ত্রীকে যদি সিজার করতে হয় তাহলে জেনারেটরে তেল কিনে দিতে হবে। আমি তেল কিনে দিলে তারপর ডাক্তার আমার স্ত্রীকে সিজার করে।

রোগীর আত্মীয় সিদ্দিকুর রহমান জানান, তার এক আত্মীয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ১০ দিন আগে ভর্তি হয়েছেন। এরপর থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বিদ্যুৎ ও পানি নেই।
রোগীদের অসহনীয় কষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা জেলা শহরের হাসপাতালের অবস্থা এমন হতে পারে না। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা: তওহীদুর রহমান জানান, গত এক সপ্তাহ আগে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ট্রান্সফরমারটি নষ্ট হয়ে যায়। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের প্রয়োজন ১৫০ কেভি পাওয়ার ট্রান্সফরমার। বিদ্যুৎ অফিসে বারবার বলা হলেও তারা ৫০ পাওয়ার কেভির বেশি ট্রান্সফরমার দিতে পারছে না। এ বিষয়ে খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরে ১৫০ পাওয়ার কেভি ট্রান্সফরমার চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নতুন ট্রান্সফরমারটি পাওয়া গেলে অপারেশনসহ যাবতীয় কাজ করা যাবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন ৫০ কেভি পাওয়ার ট্রান্সফরমার লাগানো হয়েছে তাতে কাজ হচ্ছে না। বর্তমানে হাসপাতালে ২৫০/৩০০ জন রোগী ভর্তি আছে। দুর দুরান্ত থেকে অপারেশন করতে আসা রোগীরা ফিরে যাচ্ছে বলে তিনি জানান। এ ছাড়া হাসপাতালের অপারেশন আপাতত বন্ধ আছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো: ইফতেখার হোসেন জানান, রোগীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ অফিস থেকে ৫০ কেভি পাওয়ারের একটি ট্রান্সফরমার লাগানো হয়েছে। নতুন ১৫০ কেভি ট্রান্সফরমটি দুই একদিনে মধ্যে হাতে পাওয়া যাবে। নতুন ট্রান্সফরমারটি হাতে পেলে আগের মত অপারেশনসহ যাবতীয় কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)