আওয়ামী লীগ-বিএনপির আয়-ব্যয় দুটিই বেড়েছে

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গত বছর (২০১৭) বিভিন্ন খাত থেকে আয় করেছে ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা। ব্যয় হয়েছে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা। বছর শেষে দলটির কোষাগারে উদ্বৃত্ত রয়েছে ছয় কোটি ৬১ লাখ ৪৮ হাজার ১১৭ টাকা। ক্ষমতাসীন দলটি গতকাল মঙ্গলবার ২০১৭ সালের আয়-ব্যয়ের এই হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে।

এর আগে ৩১ জুলাই নির্বাচন কমিশনে হিসাব জমা দিয়েছে বিএনপি। সে অনুযায়ী ২০১৭ সালে বিএনপির মোট আয় ৯ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার ৯০২ টাকা। ব্যয় হয়েছে চার কোটি ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৪ টাকা। বাকি পাঁচ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৯৪৮ টাকা হাতে বা ব্যাংকে রয়েছে।

আওয়ামী লীগ গতকাল ইসিতে হিসাব জমা দেওয়ার পর দলটির দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের এ বিষয়ে তথ্য জানান। দলটির ২০১৬ সালে আয় ছিল চার কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭ টাকা। আর ব্যয় হয়েছিল তিন কোটি এক লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৯ টাকা। উদ্বৃত্ত ছিল এক কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৯ টাকা। আর ব্যাংকে জমা ছিল ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ১১ হাজার ৪৪১ টাকা।

এ হিসাবে গত বছর ক্ষমতাসীন এই দলের আয় ও ব্যয় দুটিই বেড়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে দলটির আয় হয়েছিল সাত কোটি ১১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা। আর ব্যয় ছিল তিন কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৯ টাকা। অর্থাৎ সে বছর দলটি প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা উদ্বৃত্ত দেখিয়েছিল। ২০১৪ সালে দলটি আয় দেখিয়েছে ৯ কোটি পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৩ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছিল তিন কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৮২১ টাকা। উদ্বৃত্ত ছিল সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা।

আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের আয়ের প্রধান উৎসের মধ্যে রয়েছে দলের নতুন ভবন নির্মাণে অনুদান, দলের সদস্যদের বার্ষিক চাঁদা, ব্যাংকে জমা অর্থের লভ্যাংশ ইত্যাদি। আর ব্যয়ের প্রধান খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে দলের ভবন নির্মাণ, কর্মচারীদের বেতন-বোনাস, আপ্যায়ন, সভা সেমিনার, ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি।

এর আগে ৩১ জুলাই নির্ধারিত সময়ের শেষ দিনে নির্বাচন কমিশনে তাদের আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয় বিএনপি। আওয়ামী লীগসহ সাতটি দল সময়মতো হিসাব দিতে না পারায় ইসিতে আবেদন করে ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে নেয়।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হিসাব অনুসারে এর আগে ২০১৬ সালে বিএনপির আয় হয় চার কোটি ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩০ টাকা। ব্যয় হয় তিন কোটি ৯৯ লাখ ৬৩ হাজার ৮৫২ টাকা। ২০১৫ সালে দলটির আয় ছিল এক কোটি ৭৩ লাখ তিন হাজার ৩৬৫ টাকা। সে সময় বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয় এক কোটি ৮৭ লাখ ২৯ হাজার ৬৪৯ টাকা। ২০১৪ সালে আয় দুই কোটি ৮৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৪ টাকা এবং ব্যয় হয় তিন কোটি ৫৩ লাখ তিন হাজার ৫৯০ টাকা।

এদিকে এবার জাতীয় পার্টির (জাপা) আয়ও বেড়েছে। ২০১৭ সালে দলটি আয় করেছে এক কোটি আট লাখ ৫৫ হাজার ২৪০ টাকা। এ সময় দলটি ব্যয় করেছে এক কোটি সাত লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ টাকা। এক লাখ টাকার বেশি উদ্বৃত্ত রয়েছে দলটির। এর আগে ২০১৬ সালে জাপার আয় ছিল ৭৩ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা। ব্যয় হয় এক কোটি পাঁচ লাখ ৮৩ হাজার ৩০৩ টাকা। ২০১৫ সালে দলটির ৯৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় এক কোটি ৪৯ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪৩ টাকা।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী নিবন্ধিত দলগুলোর জন্য প্রতিবছর ৩১ জুলাই কোনো নিবন্ধিত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফার্মের মাধ্যমে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে দাখিলের বিধান রয়েছে। কোনো দল পর পর তিন বছর এই হিসাব দাখিল না করলে নির্বাচন কমিশন ওই দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)