বিয়ে না’ই করুক, ‘ও আমার শরীর ও মনের চাহিদা মেটাচ্ছে’!
ডিভোর্সি পিয়াসি সেনচৌধুরী। ৩৮ বছরের এই নারী তার থেকে ১০ বছরের বড় একজন বিবাহিত সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এর আগেও তার (বিবাহিত লোকটি) দু’বার ডিভোর্স হয়েছে। পিয়াসি জানেন, তার বয়ফ্রেন্ড কোনোদিন স্ত্রীকে ছেড়ে তার কাছে আসবে না। কিন্তু তাতেও কোনো অসুবিধা নেই তার! কারণ… সে তার চাহিদা মেটাচ্ছে।
তার কথায়, অনেকদিন ধরে একা থাকি। ও আমার শারীরিক এবং মানসিক দুটো চাহিদা মেটাচ্ছে। এটাই আমার কাছে মুক্ত বাতাসের মতো। বিয়ে না’ই করুক, কোন আপত্তি তুলবো না।
লেখিকা শ্রীময়ী পিউ কুণ্ডুর নতুন বই ‘স্টেটাস সিঙ্গল’এ উঠে এলো এই অজানা তথ্য। তাতে পুরো বিষয়টি বেশ রোমাঞ্চকরভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন তিনি। মূলত কেমন হয় ‘সিঙ্গল’ মেয়েদের একাকীত্ব জীবন? তার স্বরূপ বিশ্লেষণে এই অভিনব পদ্ধতি তুলে ধরেছেন এই লেখিকা।
তার মতে, পিয়াসির মতো মহিলারা অর্থনৈতিক ভাবে বিবাহিত বয়ফ্রেন্ডের উপরে নির্ভরশীল নন। নিজেকে ‘সতীন’ হিসেবেও দেখতে চান না তারা। তবে জীবনটাকে উপভোগ্য করতে নির্দিষ্ট মানুষের কাছ থেকে শারীরিক তৃপ্ত হতে চান এই নারীরা।
শুধু পিয়াসি নন, বেঙ্গালুরুর (ভারতের একটি প্রদেশ) একটি আর্ট ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অরুন্ধতী ঘোষ আবার বিশ্বাস করেন বহুগামিতায়। একই সময়ে বিভিন্ন শহরের একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখায় তিনি বিশ্বাসী। এটাকে তিনি চরিত্রের স্বাভাবিক প্রকাশ বলেই মনে করেন।
পিয়াসি হোক বা অরুন্ধতীই হোক, এমন প্রায় তিন হাজার একলা মেয়ের সঙ্গে কথা বলে লেখিকা শ্রীময়ী পিউ কুণ্ডুর প্রকাশ করেছেন সাম্প্রতিক সাহসী বই ‘স্টেটাস সিঙ্গল’। যিনি নিজেই ৪০এ পা দিয়ে রয়েছেন ‘সিঙ্গল’। কলকাতার মেয়ে শ্রীময়ী এই শহরে বেড়ে উঠলেও দিল্লিতে পরিবারের সঙ্গেই কাটিয়েছেন কর্মজীবনের অনেকটা সময়।
তিনি বলছেন, এমনটা মনে করার কারণ নেই যে, ‘সিঙ্গল’ মহিলা মানে শুধুই খুল্লামখুল্লা সম্পর্ক আর সেক্সের গল্প। এর বাইরেও একলা মেয়েদের একটা জগৎ রয়েছে। যা আমরা দেখেও দেখতে পাই না।
এদিকে, তার বইতে শ্রীময়ী লিখেছেন, দেশের জনসংখ্যার ২১ শতাংশই ‘সিঙ্গল’ মহিলা। আর এদের মধ্যে কেউ নিজের ইচ্ছেতে একলা, আবার কেউ বাধ্য হয়ে সিঙ্গেল রয়েছেন।
৩০-এ পা দিয়ে যদি কোনো মেয়ে অবিবাহিত থাকেন, তাহলেই তাকে ‘সিঙ্গল’ ধরে নেওয়ার রেওয়াজ ভারতীয় সমাজে। একদিকে বাবা-মায়ের দেয়া বিয়ের চাপ, অন্যদিকে বিবাহিত বন্ধুদের অকাতর জ্ঞান। এসবের মাঝে পড়েই ‘অত্যাচারের শুরু’ হয় তাদের। আমার বয়স যখন ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল, তখন কিন্তু এত চাপ সহ্য করতে হয়নি। কোনো পরিবর্তনও হয়নি। কিন্তু ৩০ বছর পেরোতেই জীবন যেন বদলে গেলো, বললেন লেখিকা।
তার ক্ষোভ, বর্তমান সমাজে ‘সিঙ্গল’ শব্দটা একটা ‘গালাগালির’ মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র :ডেইলি বাংলাদেশ