আন্দোলনকারীরা আবার মাঠে নামলে কঠোর হবে প্রশাসন

আন্দোলনরত ছাত্ররা আবার মাঠে নামলে তাদের বিষয়ে কঠোর হবে প্রশাসন। তাদের ঘরে ফেরানোর বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া যায় তা নিয়ে ভাবছে সরকার। সূত্র বলছে, সরকার ইতোমধ্যে ছাত্রদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। এখন শিক্ষক ও অভিভাবকদেরকেই শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরাতে হবে। তারা ছাত্রদের ঘরে ফেরাতে ব্যর্থ হলে ফেরানোর দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ছাত্র বিক্ষোভ কীভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৈঠক সূত্র জানায়, ছাত্রদের ঘরে ফেরানোর বিষয়ে বৈঠকে অধিকাংশ কর্মকর্তা কঠোর অবস্থানে যাওয়ার পক্ষে মতামত দেন। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বিষয়ে করণীয় কী তা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় পুলিশকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। সূত্র বলছে, শনিবার আন্দোলনকারীরা মাঠে নামলে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের মাঠ থেকে সরে যেতে বলবে। প্রাথমিক অবস্থায় ছাত্রদের অনুরোধ জানানো হবে। তারপরও যদি তারা মাঠ না ছাড়ে তাহলে পুলিশ কঠোর হবে এবং মাঠ ছাড়াতে বাধ্য করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রী ও যাদের কেন্দ্র করে আন্দোলন সেই মিমের বাবা ও করিমের মা আন্দোলনরত সকল শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যেতে বলেছেন। মিমের বাবা ছাত্রদের লেখাপড়ায় মন দিতে বলেছেন। তিনি এমন কথাও বলেছেন, আমার মেয়েকে আমি আর ফিরে পাব না। কিন্তু তোমাদের আন্দোলনে অন্য কেউ প্রবেশ করে দুর্ঘটনার মাধ্যমে আরেক বাবা-মার কোল খালি হোক তা আমি চাই না।

সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, সব দাবি মেনে নেবেন। তারপরও ছাত্ররা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত রাজপথে ছিল। গত বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিন ছাত্রদের আন্দোলন নতুন রূপ ধারণ করে। কোনো কোনো এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও যোগ দেন। ঢাকার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি যানবাহনে মেয়াদসহ লাইসেন্স আছে কি না, তা তল্লাশি করে। ছাত্রদের আন্দোলনে চতুর্থ দিন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও পঞ্চম দিনে বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা ঘটে।

পুলিশের গাড়িতে ও বাসে আগুন দেয়ার পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় আন্দোলনকারীরা। অনেক স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ইউনিফর্ম ছাড়া সাধারণ পোশাকে অনেককে দেখা গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ অভিযোগ করছে, আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছাত্রদল ও শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটছে। পুলিশ বলছে, ভাংচুর ও গাড়িতে আগুন দেয়াসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটালে পুলিশ এ্যাকশনে যেতে বাধ্য হবে।

এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়া মেনে নেয়া হয়েছে। তারপরও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার বিকল্প থাকবে না।’ তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সঙ্গে স্বার্থান্বেষী মহল ও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ ঢুকে পড়েছে। তাই সরকারের পক্ষে হাত গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই।’

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটালে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুযোগসন্ধানীরা ধরা পড়লে প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে ‘

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)