থানা, ডিসি অফিস ঘেরাওসহ হরতাল-অবরোধের কথা ভাবছে বিএনপি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারকে শেষ মরণ কামড় দেয়ার চেষ্টা করবে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের যে ভুলগুলো করেছে, সেই ভুলটি দ্বিতীয়বার করতে চায় না দলটি। ওই ভুলগুলো পর্যালোচনা করে ইতিমধ্যে কর্ম-পরিকল্পনাও ঠিক করেছে দলটি। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি নিয়ে এবার মাঠে থাকবে বিএনপি। এরমধ্যে খালেদা জিয়া মুক্তির দাবিতে দল ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে গেয়ে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করবেন নেতাকর্মীরা। তবুও এবার রাজপথ ছাড়বে না দলটি।

এছাড়া ইউনো অফিস, নির্বাচন কমিশন কার্যালয়, থানা এবং ডিসি অফিস ঘেরাও করার কথাও ভাবছে বিএনপি। আর এসব কর্মসূচি পালনের এক পর্যায়ে গিয়ে হরতাল এবং অবরোধের ডাক দেবে দলটি। বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তবে কবে নাগাদ এসব কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করা হবে-সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি দলটি। দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের সদস্যরা বৈঠক করে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘অনেকেই বলেন, সময় চলে যাচ্ছে। আমি বলি, আপনারা কোটা বিরোধী আন্দোলন দেখেছেন। কেউ কী জানতেন, কে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন? আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাধ্য হয়ে এবং আন্দোলনকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সুতরাং যেমন করে কোটা বিরোধী আন্দোলন আপনাদের দৃষ্টির অগোচরে বিশাল আকার ধারণ করেছিল, আমার দৃঢ় বিশ্বাস- এই ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার সরকারের পতনের আন্দোলন নোটিশ ও দিন-তারিখ ঠিক করে হবে না। জনগণই পথ রোধ করে দাঁড়াবে। আমরা জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের সাথে থাকবো’।

সূত্রটি আরো জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে যখন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে- ওই সময় উপজেলায় যেসকল নেতাকর্মীরা জেলায় থাকবেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে উপজেলায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর জেলায় যে সকল নেতাকর্মীরা ঢাকায় আছেন, আন্দোলনের সময় তাদের নিজ নিজ জেলায় গিয়ে কর্মসূচিগুলোর সাথে সম্পৃক্ত থাকার নির্দেশ ইতিমধ্যে দেয়া হয়েছে। আর এর ব্যত্যয় ঘটলে তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না বলেও সতর্ক করে দেয়া হয়।

এছাড়া আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আদালতে কর্মসূচি জোরদার করতে আইনজীবীদের কেন্দ্রীয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও সূত্রটি জানায়।

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রকল্পের বিরুদ্ধে আজকে আমাদেরকেও প্রকল্প তৈরি করতে হবে। বিএনপির প্রকল্প তৈরি করতে হবে। এই প্রকল্পের কাজ হবে, যেখানে গ্রেপ্তার করতে যাবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যেখানে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাবে, সেই থানা ঘেরাও করতে হবে। যেখানে নির্বাচন কমিশন অচল হয়ে যাবে, কমিশন অফিস ঘেরাও করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের যেসমস্ত কর্মকর্তারা এ প্রকল্পের সাথে জড়িত আছেন, তাদেরকে ঘেরাও করতে হবে। তাদের নাম উচ্চারণ করতে হবে’।

আমির খসরু আরো বলেন, আওয়ামী লীগের প্রকল্পের সাথে যে সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা জড়িত আছেন, তাদের একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। তাদেরকে উন্মোচিত করতে হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)