শ্রমিকের খরচে বরিশাল সিটি নির্বাচনে ডা. মনীষা চক্রবর্তী

এবারই প্রথম কোনো নারী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি একজন চিকিৎসক। নাম মনীষা চক্রবর্তী। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়ও রয়েছে। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা কমিটির সদস্যসচিব তিনি। তাঁর নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের প্রক্রিয়াটি মানুষের নজর কেড়েছে। মাটির ব্যাংকে সাধারণ মানুষের জমানো টাকায় চলছে তাঁর নির্বাচনী কার্যক্রম।

বরিশাল শহরে প্রান্তিক মানুষের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে রাজপথে কয়েক বছর ধরেই সক্রিয় বাসদের নেত্রী মনীষা। ব্যাটারিচালিত রিকশা উচ্ছেদের প্রতিবাদে গত ১৯ এপ্রিল শ্রমিকেরা বরিশাল শহরে মিছিল বের করেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মনীষাও। সেদিন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ২৬ এপ্রিল জামিনে কারাগার থেকে ছাড়া পান তিনি।

বাসদের নেতারা জানান, ৩৪তম বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ পান মনীষা চক্রবর্তী। কিন্তু সরকারি চাকরিতে যোগ না দিয়ে এই চিকিৎসক রাজনীতির সঙ্গেই যুক্ত রয়েছেন। বিনা পয়সায় গরিব মানুষকে চিকিৎসা দেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে থাকেন তিনি। শ্রমিকদের মধ্যে জনপ্রিয় তিনি। শ্রমিক ও বস্তিবাসীর ‘দিদি’ মনীষা সিটি নির্বাচনে ভালো ভোট পাবেন বলে বাসদ নেতাদের ধারণা। মনীষার দাদা শহীদ মুক্তিযোদ্বা, বাবাও মুক্তিযোদ্ধা। পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণেও তাঁকে নিয়ে আগ্রহ আছে মানুষের।

বরিশালে প্রথমবারের মতো মেয়র পদে নারীর প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে বড় দুই দল। বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেন, দেশের প্রধান দুই দলের শীর্ষ নেতা নারী। সব ক্ষেত্রে নারীর এগিয়ে আসাকে সাধুবাদ জানাই। অন্যদিকে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী বলেন, মেয়র পদে নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ ইতিবাচক। তাঁর জন্য শুভকামনা রয়েছে।

শহরের নথুল্লাবাদ এলাকার একজন অটোরিকশাচালক বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকেরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন। অনেক বড় বড় নেতার কাছে গিয়েও এ ব্যাপারে কোনো সহায়তা পাইনি। মনীষা চক্রবর্তী তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শ্রমিকদের পক্ষে তিনি সব সময় সোচ্চার। অনেক শ্রমিক টাকা দিয়ে তাঁকে সহযোগিতা করছেন। মূলত শ্রমিকদের অনুরোধে নির্বাচন করছেন তিনি।

মনীষা চক্রবর্তী  বলেন, ‘নির্বাচন মানেই তো প্রার্থীদের টাকার খেলা। আমার ক্ষেত্রে এটা ব্যতিক্রম। উল্টো শ্রমিকেরা নির্বাচনের খরচ দিচ্ছেন।’ তিনি বলেন, রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ কম, তাই লোকজন অভ্যস্ত নন। প্রচারে গিয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। কেউ কেউ নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। আবার অনেকে সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মনে করছেন তাঁকে। বস্তিবাসী, বিভিন্ন পেশার শ্রমিক ও শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের মধ্যেও ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

নির্বাচনী ইশতেহার মনীষা নির্বাচনের ব্যয় সম্পর্কে লিখেছেন, ‘ভোট এবং ভোটের খরচ জুগিয়ে জনগণের পক্ষের সৎ-যোগ্য-নীতিমান প্রার্থীকে নির্বাচিত করুন, আপনার বিবেককে রক্ষা করুন।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)