ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশের মেয়েরা

ইতিহাস গড়ে নারী এশিয়া কাপ নিজেদের ঘরে তুলল বাংলাদেশ। ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে জয় পায় বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা।

নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে বাংলাদেশে লড়াকু দল হিসেবে নিজেদেরকে পরিচয় দিয়েছে। কুয়ালালামপুরের কিনরানা ওভাল স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১২ রান করেছে ভারত। ভারতীয়দের পক্ষে একাই লড়েছেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর। তার অপরাজিত হাফসেঞ্চুরিতেই একশ ছাড়ায় ভারতের ইনিংস।

ঐতিহাসিক ফাইনাল ম্যাচে প্রথমে টসে জিতে আগে বলদে করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাশ নারী দলের অধিনায়ক সালমা খাতুন। শুরুতেই স্পিনার নাহিদা আকতারকে আক্রমণে আনেন সালমা খাতুন। প্রথম ওভার থেকে ২ রান দেন নাহিদা। অফস্পিনার সালমা অপর প্রান্ত থেকে বোলিংয়ে আসেন। সালমা ১ম ওভার থেকে হজম করেন ৬ রান।

নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেটের সুযোগ সৃষ্টি করেন নাহিদা আকতার। ভারতীয় নারী দলের ওপেনার স্মৃতি মান্দানার ক্যাচ ও স্টাম্পিংয়ের সুযোগ মিস করেন উইকেটের পেছনে থাকা শামিমা সুলতানা। তবে সেই আক্ষেপ বেশীক্ষণ পোড়ায় নি বাংলাদেশ দলকে। পরের ওভারেই তিন রান নিতে যেয়ে রান আউটের শিকার হন মান্দানা।

ইনিংসের সপ্তম ওভারে নিজের প্রথম ওভারে বল করতে আসা জাহানারা আলম বোল্ড করে ফেরান দিপ্তী শর্মাকে। ১১ বলে ৪ রান করে ফেরেন দিপ্তী। দিপ্তীর ফিরে যাবার পর উইকেটে থাকতে পারেননি মিতালী রাজও। খাদিজাতুল কুবরার করা পরের ওভারেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নারীদের এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ রানের মালিক।

পরের ওভারেই পতন হয় ভারতীয় নারীদের চতুর্থ উইকেট। অবস্ট্রাকটিং দ্যা ফিল্ড হয়ে আউট হন আনুজা পাতিল। রান নেবার সময় থ্রো দেখে নিজের দৌড়ানোর দিক পরিবর্তন করেন আনুজা পাতিল, বল লাগে তার শরীরে। পরে তৃতীয় আম্পায়ার তাকে আউট ঘোষণা করেন।

প্রথম দশ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪২ রান তুলতে পারে ভারতীয় নারীরা। এরপর হাত খুলে খেলার সিদ্ধান্ত নেন হারমানপ্রীত কর। জাহানারার করা ১১তম ওভার থেকে দুইটি চারে আসে ১১ রান। রুমানা আহমেদের করা পরের ওভারে কোন বাউন্ডারি ছাড়া আসে ৬ রান।

তবে ১৩তম ওভারে বল করতে এসে ভেদা কৃষ্ণমূর্তিকে বোল্ড করে ফেরান বাঘিনীদের অধিনায়ক সালমা খাতুন। ১০ বলে ১১ রান করে আউট হন ভেদা কৃষ্ণমূর্তি। নতুন উইকেটে আসা তানিয়া ভাটিয়া দারুণ কিছু করতে পারেননি। ৬ বলে ৩ রান করে রুমানার বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তানিয়া। রুমানার ঐ ওভারেই শিখা পান্ডে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দলীয় ৭৪ রানে ভারত হারায় ৭ম উইকেট।

একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন ভারতীয় নারী দলের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কর। সালমা খাতুনকে ১৯ তম ওভারে টানা দুই চার মেরে ৩৯ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন হারমানপ্রীত। ঝুলন গোস্বামীকে নিয়ে ৮ম উইকেটে যোগ করেন ৩৩ রান। ১০ রান করে শেষ ওভারে আউট হন ঝুলন। শেষ বলে ৪২ বলে ৫৬ রান করে আউট হন হারমানপ্রীত কর। ভারত থামে ৯ উইকেটে ১১২ রান করে।

প্রথম ম্যাচে হারের পর থেকে এখন পর্যন্ত খেলা নিজেদের প্রথম ম্যাচ ব্যতীত বাকি সব ম্যাচেই দাপট দেখিয়েছেন তারা। টুর্নামেন্টে সমান সমান পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালে উঠা এ দল দুটির মধ্যে আজ বাংলাদেশকে এগিয়ে রেখেছিলেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। এর আগে মালয়েশিয়াকে ৭০ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।

বাংলাদেশ প্রমীলা একাদশ : শামিমা সুলতানা, আয়েশা রহমান, ফারজানা হক, নিগার সুলতানা, খাদিজা তুল কোবরা, ফাহিমা খাতুন, জাহানারা আলম, নাহিদা আখতার, সালমা খাতুন (অধিনায়ক), সানজিদা ইসলাম, রুমানা আহমেদ।

ভারত প্রমীলা একাদশ) : মিতালী রাজ, স্মৃতি মঠানা, হারমানপিত কের (সি), বেদী কৃষ্ণমূর্তি, আনুজা পাটিল, দীপ্তি শর্মা, ঝুলন গোস্বামী, তানিয়া ভাটিয়া (একশত), একতা বিশট, শিখা পান্ডে, পুমাম।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)