বাংলাদেশের হতাশাজনক হারে আফগানদের সিরিজ জয়

স্পোর্টস ডেস্ক:

টস জিতে আগের ম্যাচে বোলিং নিয়েছিলেন সাকিব কিন্তু এবার নিলেন ব্যাটিং। ভাগ্যকে পাল্টানোর কী নিদারুণ চেষ্টা! স্লো এবং লো পিচে ১৫০ রানই উইনিং স্কোর। সাকিবরা করতে পারলেন মোটে ১৩৪। এক রশিদ খানকে মোকাবেলা করতেই হিমশিম খেতে হলো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। চারজন ব্যাটসম্যানই বর্তমান বিশ্বের সেরা এই বোলারের শিকারে পরিণত হন। বাংলাদেশকে কোনো রকম ছাড় না দিয়ে ৬ উইকেটে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিল আফগানিস্তানরা। জিম্বাবুয়ের বাইরে প্রথম কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে সিরিজ জিতলো আফগানরা যেখানের তাদের বোলারদের নৈপুণ্যই ছিল চোখের পড়ার মতো।টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৩৪ রান। এই সামান্য পুঁজি নিয়ে টি-টোয়েন্টির ধুমধারাক্কা খেলায় টিকে থাকা যে খুব কঠিন সেটা ক্রিকেটপাগল সবাই জানে। আফগান ইনিংসের তৃতীয় বলেই ম্যাচ জয়ের টোটকা পেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ কিন্তু নাজমুলের বলে আফগান ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শেহজাদের ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকুর রহিম। দলে বিশেষজ্ঞ উইকেট কিপার হিসেবে লিটন দাস থাকলেও মুশফিকই যে উইকেটের পেছনে শুরু থেকে দাঁড়াবেন সেটা সবাই জানতো। শুরুতেই গলদ হলে ক্রিকেট ম্যাচ জেতা কঠিন। এমনটা বাংলাদেশও জানে। তবে চেষ্টায় কমতি রাখেনি বাংলাদেশের বোলিং ডিপার্টমেন্ট। কিন্তু পারলো আর কই। আফগানদের প্রথম উইকেট ফালাতেই লেগে যায় ৬ ওভার।পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে শেহজাদকে ২৪ রানে ফেরান আবু হায়দার রনি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশকে চেপে ধরে আফগান দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান উসমান ঘানি এবং সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। দলীয় ৫৭ রানে ঘানিকে নিজের শিকারে পরিণত করেন রুবেল। তখনই রানের লাগাম টেনে ধরা শুরু করে বাংলাদেশ। স্পিন ট্রাকে ভালোই চেপে ধরে আফগান ব্যাটসম্যানদের। বিধ্বংসী হওয়ার আগেই অধিনায়ক স্টানিকজাইকে ফেরান মোসাদ্দেক। কিন্তু এক নবীই সব সর্বনাশ করে ফেলে। ১৫ বলে মারমুখী ৩১ রান করে দলকে অবিস্মরণীয় এক জয় উপহার দেন এই অলরাউন্ডার। রুবেলের করা ১৯ তম ওভারে একাই নেন ২০ রান। ৭ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় রশিদ খানের দল।

এর আগে দেরাদুনে দ্বিতীয় ম্যাচেও টসে জেতেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ভাগ্য বদলের লক্ষ্যে এই ম্যাচে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আগে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার লিটন কুমার দাশ। অপরপ্রান্ত ধীরেসুস্থে খেলতে থাকেন তামিম ইকবাল।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সাব্বির রহমান এবং তামিম ইকবাল আশা দেখাচ্ছিলেন ভারো কিছু করার। কিন্তু ৩ চারের মারে মাত্র ১৩ রান করে সাজঘরে ফিরে যান সাব্বির। বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মুশফিকও। ম্যাচের প্রথম ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি ফেরেন ২২ রান করে।

১ ছক্কা এবং ১ চারের মারে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান। তখনও অপরপ্রান্তে অবিচল ওয়ানডে মেজাজে খেলতে থাকা তামিম। তাকে সঙ্গ দিতে এসে ব্যর্থ হন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ফেরেন মাত্র ৩ রান করে। বেশি কিছু করতে পারেননি মোসাদ্দেক সৈকত এবং সৌম্য সরকারও।
অতিরিক্ত ধীরগতির ইনিংসে ৪৩ রান করে ফেরেন তামিম। এই রান করতে ৪৮ বল মোকাবেলা করেন তিনি। শেষদিকে দুই বোলার আবু হায়দার রনি এবং নাজমুল ইসলাম অপুর ১৩ বলে ২৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১৩৪ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। রনি ২১ এবং অপু ৬ রান করে অপরাজিত থাকেন।আফগানদের পক্ষে রশিদ খান ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচায় নেন ৪টি উইকেট। মোহাম্মদ নবী নেন ২টি উইকেট।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)