কালিগঞ্জে চিটিং করায় বাবা-ছেলেকে গনধোলাই: হাসপাতালে ভর্তি

জাহিদ হোসাইন:

সাতক্ষীরা কালিগঞ্জের প্রতারকচক্রের মুল হোতা নাজমুল হাসান মিন্টু ও তার বাবা সামছুর রহমানকে উপর্যুপুরি গনধোলাই দিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে ভূক্তভূগীরা। শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে কালিগঞ্জের রঘুনাথপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পালিয়ে মারাত্মক আহতাবস্থায় তারা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কালিগঞ্জ ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, হিউমান ইমপ্রুবমেন্ট হিফ নামে একটি বেসরকারি কোম্পানির খুলনা বিবাগীয় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কালিগঞ্জের রঘুনাথপুর গ্রামের নাজমুল হাসান ওরফে চিটার মিন্টু, তার বাবা হাফিজুর রহমান ও একই এলাকার মামুনের সহায়তায় কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সুফিয়া খাতুন, হাফিজুর রহমান, মাজেদা খাতুন, রোকেয়া খাতুন, জাহানারা খাতুন, আবুল হোসেন, জিয়াদ গাজী, রবিউল ইসলাম, আনারুল ইসলামসহ সাতক্ষীরার ৭ উপজেলার অনেক বেকার যুবক-যুবতীকে সে ওই কোম্পানিতে চাকুরী দেয়। এরপর তাদের বলা হয় এলাকার গরীব অসহায়দেও সহায়তায় প্রত্যেককে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে এ জন্যে প্রত্যেক গ্রাহককে ৫০ হাজার করে টাকা দিতে হবে।

ওদের কথামত তারা গ্রাহক যোগাড় করে সাতক্ষীরার ৭ উপজেলা হতে প্রায় হাজার খানেক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা তার হাতে তুলে দেয়। এরপর সেই টাকা নিয়ে সে উধাও হয়ে যায় মিন্টু। ৫ বছর ধরে তার কোন হদিস পায়নি ভূক্তভূগীরা। এরপর তারা জানতে পারে মিন্টু বাড়িতে এসেছে। গত শুক্রবার প্রায় ২০০ জন ভূক্তভূগী তার বাড়িতে যায়। এসময় সে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি প্রদান করে। সে বলে যে, ‘আমি এসপির ভাগ্নে জামাই, আমার বিরুদ্ধে তোমরা যা ইচ্ছে তাই কর।” এরপর ভূক্তভূগীরা ক্ষেপে গিয়ে তাকেসহ তার বাবাকে উপর্যুপুরি গনধোলাই দেয়। এরপর আমরা ছুটে এসে তাদের থ্যাকানোর চেষ্টা করি। এই সুযোগে সে ও তার বাবা পালিয়ে যেয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জেনেছি।

এদিকে সাতক্ষীরার সদর হাসপাতালে চিটার মিন্টু ভর্তি হয়েছে শুনেই শনিবার দুপুরে ছুটে আসে সাতক্ষীরা সদরের ২০ থেকে ২৫ জন গ্রাহক। তাদের একজন শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে তাকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছি। তার কোন হদিস পাচ্ছিলাম না। আজ শুনলাম তার এলাকার ভূক্তভূগীরা তাকে ও তার বাবাকে গনধোলাই দিয়েছে। তারা এখন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাই এসেছি। হয় মিন্টু আমাদের টাকা ফেরৎ দেবে না হয় আমরা তাকে ও তার বাবাকে হাসপাতাল হতে যেতে দেবোনা। ওরা আমাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিন্টুর বাবা শামছুর রহমান গনধোলাইয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে আমাদের মারপিট করা হয়েছে।

কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, এ সংক্রান্ত ব্যাপারে আমরা কিছুই জানিনা। তবে ভূক্তভূগীরা অভিযোগ দিলে অবশ্যই ওই প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)