প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে যাচ্ছে টাটা বিল্লাল(ভিডিওসহ)
আহাদুর রহমান:
টাটা বিল্লাল! না এটা কোন সন্ত্রাসী বা নেতার নাম নয়। না এটা কোন ভিলেন বা হিরোর নাম। এটা এমন এক হিরোর নাম যিনি প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে চ্যালেঞ্জিং জীবনে এগিয়ে চলছেন।
টাটা বিল্লালের ভাল নাম মোঃ বিল্লাল হোসেন। সার্কাসের খেলা দেখিয়ে জীবন সংগ্রামে এগিয়ে চলা, স্বপ্ন দেখেন উজ্জ্বল দিনের। বিল্লাল হোসেনের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের বুইতা গ্রামে। বাবার নাম মোঃ আব্দুল গণি গাজী। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। সকল ভাই-বোন স্বাভাবিক হলেও জন্ম থেকে তিনি খর্বাকৃতির। বিল্লারের বয়স আনুমানিক ৩৭ বছর। সার্কাস খেলা দেখাচ্ছেন প্রায় ৩০ বছর। সাতক্ষীরা সদরের বল্লী আমতলার দক্ষিণ বাংলা সার্কাসের মালিক বজলুর রহমান ৭ বছর বয়সে প্রথমে বিল্লাকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে সার্কাসের কসরতের সাথে পরিচিত করান। বিল্লাল তালিম নেয় বিভিন্ন রকমের শারিরিক কসরতের। সেই থেকে শুরু এরপর ভারতের হুগলি, শ্রীপুর, বজবজসহ বিভিন্ন এলাকায় খেলা দেখান ও তালিম নেন। খেলা দেখিয়েছেন ভারতের পীরগাছা টাটা সার্কাসে। সেখানেই সবাই তার নাম দেন টাটা বিল্লা নামে।
https://www.facebook.com/1097067257079185/videos/510589906387905/?t=3
বাংলাদেশে ফিরে চট্রগ্রামের লকি সেভেন সার্কাসে পারফর্ম করেন প্রায় তিন বছর। ভালই চলছিল তার জীবন। এরপর হঠাৎ একদিন সার্কাসের দলপতি মারা গেলে ভাঙতে শুযরু করে দল। তারপর থেকে অস্থায়ী ভাবে বিভিন্ন জায়গায় শারিরিক কসরত করে টিকে থাকা। বর্তমানে তিনি একটি নছিমনে কেবিন বানিয়ে সাতক্ষীরা ও যশোরের বিভিন্ন জায়গায় খেলা দেখিয়ে বেড়ান। যে কামাই হয় তাতে কোন রকম সংসার চালান।
বিল্লাল জানান, যে কামাই করি তাতে কোনরকমে সংসার চলে। বিভিন্ন জায়গায় খেলা দেখাই। আমিতো একাই দেখাই অনুমতি নেব কার কাছ থেকে। তারপরও খেলা দেখাতে গিয়ে বিভিন্ন নেতার পরিচয়ে চাঁদা চায় লোকজন। এমনিতেই হাটা চলা করতে খুব কষ্ট হয়। তার থেকেও বেশি কষ্ট খেলা দেখানোয়। তাতে অনেকে না বুঝে বাজে কথা বলে। মনে অনেক কষ্ট পাই। এরকম একটা কথা মনে আছে। আমি একদিন খেলা দেখাচ্ছি। আমি যে বোর্ডের উপর খেলা দেখাই সে বোর্ডে একদিন কিছু মানুষ হঠৎ আমার বোর্ডে লাথি মারে। আমি পড়ে যেয়ে খুব ব্যাথা পাই। তবে মনে কষ্ট পেয়েছি সবচাইতে বেশি।
আমি চাইনা এই খেলা দেখিয়ে রোজগার করতে। কিন্তু কী করব এ ছাড়াতো আর কিছু পারিনা। খুব রিস্কি। মাথা কয়েকবার ফেটেছে। হাত ও পায়ে আঘাত পেয়েছি অনেকবার।
সরকারি কোনরকম সাহায্য পান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিল্লাল জানান, প্রতিবন্ধি ভাতা, ভিজিএফ, ভিজিডি অথবা ১০টাকার চাল কোন কিছুই পাই না। শওকত আলী চেয়ারম্যানের কাছে গেছিলাম আশ্বাস ছাড়া কিছুই দেয়নি।
এ বিষয়ে কলারোয়ার জালালাবাদ ইউনিয়নে চেয়রম্যান শওকত আলীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম আশ্বাস দিয়ে বলেন, বিল্লাল আমার ইউনিয়নের ছেলে। তাকে সহযোগিতা করা আমার দায়িত্ব। আমার সাথে যোগাযোগ করলে সহযোগিতা করার আপ্রাণ চেষ্টা করব।