বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মসূচি সপ্তাহ উপলক্ষে সাতক্ষীরায় সংবাদ সম্মেলন:নিউইয়র্ক সামিটে বাংলাদেশের ক্ষতি তুলে ধরা হবে

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির মুখে বাংলাদেশ। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখোমুখি। মানব জীবন পানিসম্পদ ও সবুজ প্রকৃতিকে সুরক্ষা দিতে এই ক্ষতি ও সম্ভাব্য সব ঝুঁকি মোকাবেলা এখন জরুরি।

এমন বাস্তবতাকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় বেসরকারি পর্যায় থেকে শুরু হয়েছে ‘বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মসূচি সপ্তাহ’। শুক্রবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এই কর্মসূচি। এতে বলা হয় নিউইয়র্কে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে ‘জাতিসংঘের ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিট’। এই সামিটে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেসরকারি সংস্থা ‘লিডার্স’ এর নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আবহাওয়া জলবায়ু বৈরি হয়ে উঠছে। ভূপৃষ্ঠ অতিমাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে উঠায় পানিতে ও জমিতে বাড়ছে লবনাক্ততা। জলাবদ্ধতা ও লবনাক্ততার পাশাপাশি প্রকৃতি নিচ্ছে রুদ্র রূপ। ফলে ঝড় বন্যা জলোচ্ছ্বাস নদী ভাঙ্গন উপকূলীয় জেলাগুলির বাসিন্দাদের বারবার বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এখানে জীবন প্রকৃতি পানি কৃষি প্রাণী সুন্দরবন মাটি এমনকি স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাপী একই ধরনের ক্ষয় ক্ষতি হয়ে আসছে। এ প্রসঙ্গে ধনী দেশগুলির অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরনকে দায়ী করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় এভাবে কার্বন নিঃসরণ হতে থাকলে এক সময় মানবজীবন ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে পড়বে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলে,ন জলবায়ু পরিবর্তনে মানবজীবনের ক্ষতি নিয়ে ১৯৯৫ সালে জার্মানির বার্লিনে শুরু হয় জলবায়ু সম্মেলন। এর পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত ২৪ বছরে ২৪ টি সম্মেলন হলেও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলি যেমন কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি তেমনি কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে কার্যকর ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়নি। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিশ্বব্যাপী ক্ষতি তো কমেই নি বরং তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেড়েছে। যার কুফল ভোগ করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ধরণীকে বাঁচানোর তাগিদ দিয়ে সুইডেনের ১৬ বছর বয়সী স্কুল ছাত্রী গ্রেটা থানবার্গ গড়ে তুলেছেন ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’। গত মার্চে গ্রেটার আহবানে বিশ্বের ১০০ টি শহরের ১৪ লাখ ছাত্রছাত্রী পথে নেমে এসেছিল। গ্রেটা থানবার্গ এবার ছোট নৌকায় নিউইয়র্ক পৌঁছে গেছেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে যোগ দিয়ে ধরণীকে রক্ষার জোর তাগিদ দেবেন। তার ডাকে এরই মধ্যে বিশে্বর ৪০০ শহরে এক কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী পথে নেমে এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জলবায়ু সপ্তাহের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্কুল ধর্মঘট, পদযাত্রা, যুবদের কর্মশালা, সাইকেল র‌্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রতীকি গণ আদালত ,মানববন্ধন এবং সাতক্ষীরা ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি পেশ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কর্মসূচি সপ্তাহের আহবায়ক মাস্টার নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী প্রমূখ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)