‘ঈদ নেই’ কাশ্মীরে

ক্ষোভ আর আতংকে কাশ্মীরে ঈদ বিবর্ণ। সেখানে যেন আনন্দ নয়, ভর করেছে আতঙ্ক আর শোকের ছায়া। ভারত শাসিত কাশ্মীরজুড়ে কয়েক হাজার আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। কড়া নিরাপত্তার বেড়াজালে কাশ্মীর উপত্যকায় যেকোনো বড় জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। অনেকে নামাজে অংশ নিলেও, কোরবানী দিয়েছেন অল্প সংখ্যক মানুষ। খবর বিবিসি, এএফপি।

ঠিক এক সপ্তাহ আগে গত সোমবার বিজেপি সরকার কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন ক্ষমতা বাতিল করে ওই অঞ্চলে কারফিউ জারি করে। পাঁচদিন পর ঈদের কেনাকাটা করার জন্য কারফিউ কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। শ্রীনগরে অল্প কিছু দোকান খোলা ছিল। অনেক মানুষ বের হয়েছিলেন ঈদ ও পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে। আবার অনেকের হাতে নগদ টাকা না থাকায় বেরই হতে পারেনি।

এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল রোববার কিছু সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও সন্ধ্যা থেকে আবার কারফিউ জারি করা হয়। বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ সোমবার ঈদের দিনও কাশ্মীরে কারফিউ বলবৎ থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

কাশ্মীরের বাসিন্দা শাকিল ভাট কোরবানির পশু কেনার উদ্দেশ্যে ১০ কিলোমিটার পথ হেঁটে শ্রীনগরের বাজারে পৌঁছান। কিন্তু বাজারে পৌঁছে দেখেন, ভেড়া-ছাগল যে দামে বিকোচ্ছে, সে দামে কেনার সামর্থ্য নেই তার। শাকিল বলেন, ভেবেছিলাম নয় হাজার রুপির মধ্যে কোরবানির পশু কিনব, কিন্তু অনেক দাম চাইছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাজারে কোরবানির পশু এনেছেন।

কাশ্মীর উপত্যকার মুসলমানরা সাধারণত ভেড়া দিয়ে কোরবানী করে থাকেন। ভেড়া কেনার অর্থ হাতে না থাকায় এটিএম বুথ ও ব্যাংকের খোঁজে বেরিয়েছিলেন আরেক বাসিন্দা বশির আহমাদ। কিন্তু তিনি কিছুই খোলা পাননি। পেশায় ব্যবসায়ী বশির আফসোস করে বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বের হলাম, কিন্তু সবটাই বৃথা।গত বছর কোরবানির জন্য পাঁচটি ভেড়া কিনেছিলেন বশির, এবার একটিও কিনতে পারলেন না।

ভারতের সংবিধান থেকে কাশ্মীর রাজ্যের স্বায়ত্বশাসন দানকারী ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার পর থেকে রাজ্যটি কার্যত অবরুদ্ধ এবং বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। টেলিফোন-ইন্টারনেট সংযোগ ছিন্ন রয়েছে। রাজধানী শ্রীনগরের পথে পথে সেনা টহল ও তল্লাশি চলছে, দোকানপাট বন্ধ, জনজীবন স্তব্ধ। কাশ্মিরিদের কাছে টাকা-পয়সাও নেই। শ্রীনগরে এখন চালু আছে শুধু জে অ্যান্ড কে (জম্মু ও কাশ্মির) ব্যাঙ্কের এটিএম-গুলো। অন্য কোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম কাজ করছে না, বা করলেও তাতে টাকা নেই।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)