ভারতে সরকারি অফিসে নিষিদ্ধ হলো ফেসবুক-টুইটার-হোয়াটসঅ্যাপ

ভারতে সরকারি অফিসে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে সোশ্যাল মিডিয়া- ফেসবুক, টুইটার ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় তথ্যের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। সামাজিক যোগাযোগ ছাড়াও গুগল ড্রাইভ ও ইউএসবি ড্রাইভের ব্যবহারও সীমিত করা হয়েছে। দেশটিতে সাইবার অপরাধ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৪ পাতার ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন সরকারি অফিসের গোপন তথ্যের নিরাপত্তার কথা ভেবেই কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অমিত শাহ’র নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাইবার সিকিউরিটি ডিভিশন এই নির্দেশনা তৈরি করেছে। – খবর ইকোনমিক টাইমস

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অফিসের কম্পিউটারের পাশাপাশি নিজেদের মোবাইল ফোনে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে সরকারি তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো কর্মচারি অফিসের কম্পিউটার ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে চাইলে তাকে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া অফিসের দেয়া ইমেইল আইডির বাইরে অন্য কোনো ইমেইল সরকারি কাজের জন্য ব্যবহার না করতেও ওই নির্দেশনায় সতর্ক করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা অফিসের বাইরে নিজেদের ইউএসবি যন্ত্র (পেন ড্রাইভ, হার্ড ডিস্ক প্রভৃতি) নিয়ে যেতে পারবেন না। একইসঙ্গে তারা কোনওভাবেই কোনও সরকারি তথ্য বা নথি গুগল ড্রাইভ, ড্রপ বক্স, আই ক্লাউড-এ ‘সুরক্ষিত’ রাখতে পারবেন না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনায় যে বিভাগগুলোকে নিয়ে প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- কম্পিউটারের ব্যবহার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, পাসওয়ার্ড ম্যানেজমেন্ট, স্টোরেজ মিডিয়া যন্ত্র ব্যবহার, ইমেইলের ব্যবহার, ওয়াই ফাই ব্যবহার, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাটাক।

এই নির্দেশনায় একজন কর্মকর্তাকে কীভাবে অফিসের কম্পিউটার ব্যবহার করে গোপন তথ্য সুরক্ষিত রাখতে হবে, তার পাসওয়ার্ড কীভাবে শক্তিশালী করতে হবে তাও শেখানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সব ক্লাসিফাইড কাজ এমন কম্পিউটারে করা ভালো যা ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। ন্যূনতম ১০টি অক্ষরের পাসওয়ার্ড- যেখানে নম্বরের সঙ্গে অক্ষর ও বিশেষ চিহ্ন থাকবে। কম্পিউটারে যে অ্যান্টি ভাইরাস থাকবে তার মেয়াদ যেন ঠিক থাকে। এই অ্যান্টিভাইরাস যেন সবসময় অটো আপডেট অপশনে থাকে। কম্পিউটার স্ক্রিনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুলে রেখে উঠে যাওয়া যবে না। আসন ছেড়ে উঠে যাওয়ার আগে প্রতিবার নিজের কম্পিউটার ‘লক’ করে দিতে হবে। পাশাপাশি নিজের কাজের সুরক্ষিত ব্যাক-আপ রাখতে হবে কর্মীদের।

অফিসের কম্পিউটারে কোনো ফাইল হস্তান্তর করার সফটওয়্যার ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় যেকোনো জিনিস ডাউনলোডের আগে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সন্দেহজনক কোনো কিছু ডাউনলোড করতেও নিষেধ করা হয়েছে।

এছাড়া সিস্টেমের অনুমতির বাইরে কোনও সিস্টেম থেকে কোনও কিছু ডাউনলোড করা যাবে না। ইমেইল অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড অটো সেভ করতে নিষেধ করা হয়েছে এই নির্দেশনায়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)