রোজগারের একমাত্র সম্বল ভ্যান রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ছাত্র শাহীন

দু মুঠো অন্ন ও ভাই বোনের লেখা পড়ার খরচ জোগানোর জন্য প্রতিদিনের মতো  শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হয় শাহীন ।কিন্তু সন্ত্রাসীদের কাছে মার খেয়ে বাড়ি ফেরা হলোনা তার ।সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে তার একমাত্র রোজগারের ভ্যান নিয়ে পালিয়ে গেলো ।জীবন বাচাতে যেতে হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে ।লড়তে হচ্ছে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা ।খবর শোনা মাত্র সাথে সাথে তার পাশে  দাড়িয়েছে সাংসদ আফম রুহুল হক ।এবং তার সকল দায়িত্ব নিয়েছেন আশা বঞ্চিত মানুষের আশ্রয়স্থল জননেত্রী শেখ হাসিনা ।

যশোর জেলার কেশবপুর মঙ্গলকোট গ্রামের হয়দার আলীর ছেলে শাহীন (১৪) । সে কেশবপুর দোলঘাটা দার সুন্নত দাখিল  মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বসতভিটে ছাড়া শাহীনদের কোনও জমিজমা নেই। সম্প্রতি একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান কেনে তারা। পিতা-পুত্র দুই শিফটে ওই ভ্যানটি চালিয়ে সংসারের হাল ধরে রেখেছিলো। শাহীনের ছোট দুই বোনের পড়া লেখাসহ সংসার চালাতো তারা। জীবিকার সেই শেষ সম্বলটিও নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা। সাতক্ষীরা তালা উপজেলার ধানদিয়া কৃঞ্চনগর আমজামতলা নামক স্থান থেকে ৩/৪ জন যুবক চালক শাহীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। মৃতপ্রায় দেহটি পড়ে থাকে পাটক্ষেতের পাশে ।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। শাহীনের বেঁচে থাকা নিয়ে তৈরি হয় শঙ্কা।তার অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। শনিবার রাত ১০টার দিকে শাহীনকে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়।

সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হক সংসদ অধিবেশন চলাকালীন বিষয়টি জানতে পেরে কিশোর শাহীনকে নিয়ে ঢাকার পথে থাকা তার চাচা মুনছুরের সাথে ফোনে কথা বলেন। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদেরকে শাহীনের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন। চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছিলেন যে, শাহীনের স্কাল্পে বড় ধরনের ইনজুরি হয়েছে। তার নিউরো সার্জারি করা প্রয়োজন। ডা. রুহুল হক শাহীনের চিকিৎসকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

রোববার (২৯ জুন) ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার অপারেশন শেষ করেন চিকিৎসকরা।আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে থাকবে সে। শনিবার (২৯ জুন) রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন। তিনি জানান, ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালিয়ে সংসার চালানো কিশোরটির দায়দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহীনের বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের প্রতিবেশী দেবাশীশ আইচ। তিনি জানান, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শাহীনের পালস ভালো আছে। তবে ব্রেইনে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। মাথায় রক্ত জমাট থাকার আশঙ্কায় চিকিৎসকরা তার অপারেশন করেছেন।

পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন বলেন, ‘এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে শাহীনকে উদ্ধার করে খুলনার আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার তার অবস্থার অবনতি হলে বিকালে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশে রওনা হয়।তার অপরাশন শেষ হয়েছে । সে এখন আগের চাইতে সুস্থ আছে ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)