মাত্র তিন দিনে মন জয় করুন

অনেকেই নতুন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে অস্বস্তিতে ভোগেন। অথবা লজ্জা পান। মনের মধ্যে কাজ করে সংকোচ এবং দ্বিধা। আর এতেই ভালো একটা সুযোগ বা মুহূর্ত মিস হয়ে যেতে পারে।

তবে মানুষকে আপন করে নেয়ার কিছু কলা-কৌশল রয়েছে। এর প্রয়োগ করতে পারলেই আপনারই পরিচিত বা অপরিচিত কেউ অল্প সময়ের মধ্যে আপনার আপন হয়ে ‍উঠবে।

হ্যাঁ, একটা কথা আগে বলে নেয়াই ভালো। একই সূত্র সবার জন্য সমানভাবে কাজ নাও করতে পারে। কারণ পৃথিবীর কোন সম্পর্কই নির্দিষ্ট কোন সূত্র দিয়ে বাঁধা নয়। এটি স্থান, কাল ও পাত্র অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। তো আর কালক্ষেপণ না করে চলে যাচ্ছি বিস্তারিত কলা-কৌশলে:

প্রথম সাক্ষাতেই কুশল বিনিময় করুন:
এটি একটি সাধারণ ভদ্রতা। পৃথিবীর সব স্থান, কাল ও পাত্র অনুযায়ী এই বিষয়টি প্রযোজ্য। কোন মানুষের সঙ্গে প্রথম দেখা কিংবা পরিচিতির প্রথম ধাপই হচ্ছে কুশল বিনিময়।

আর কুশল বিনিময়ের একদম শুরুতেই নিজ ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী সালাম কিংবা এ ধরনের কিছু দিন। পুরুষ হলে তার সঙ্গে হ্যান্ডশেক বা করমর্দন করুন।

আর যদি ধর্মীয় বিশ্বাসকে এভয়েড করতে চান তাহলে গুড মর্নিং বা এ রকম কিছু বলুন। তবে চেষ্টা করবেন মৃদু হাসি বিনিময় করে সালাম দিতে। তবে এক্ষেত্রে একটি কথা আছে।

পরিবেশ বুঝতে হবে। সব পরিবেশে আবার হাসবেন না। যেমন- ধরুন, কোন মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গেলেন তখন হাসি বিনিময় করে সালাম দেয়াটা আবার বোকামি। তাই আশপাশের পরিবেশ, পরিস্থিতি খেয়াল করে কুশল বিনিময় করুন।

চোখে চোখ রেখে কথা বলুন:
মানুষকে আপন করে নিতে এখানেই মানুষ ভুলটা বেশি করে। ধরুন, আপনি কারো উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলছেন।
তখন অপর পাশের ব্যক্তি মোবাইল টিপছে বা অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। কেমন লাগবে আপনার? আশা করি, তাতে আপনি ভালো বোধ করবেন না।

ঠিক তেমনি যখন কেউ আপনার সঙ্গে কথা বলবে, তখন আপনি তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো শুনুন। এতে আপনি যে তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনছেন, সেটা সে পছন্দ করবে।

ঝুঁকে বসুন:
মানুষকে আপন করে নেয়ার এটি একটি প্রধান কৌশল। যখন বসে অন্য কোন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলবেন তখন হেলান দিবেন না। অথবা কোন দিকে কাত হয়ে বসবেন না। একদম সোজা হয়ে একটু তার দিকে ঝুঁকে বসুন। মানে মাথাটা একটু এগিয়ে দিন। আর তাতে ওই ব্যক্তি মনে করবে আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। ফলে সহজেই আপনাকে সে আপন ভেবে কথা বলবে।

কথার উত্তর দিন:
মানুষকে আপন করার আরেকটি কৌশল হচ্ছে, কথা কম বলুন আর বেশি শুনুন। তবে রোবটের মতো শুধু কথা শুনেই যাবেন না। মাঝে মধ্যে কথার মাঝখানে হ্যা, হু, ও আচ্ছা, তাই- এ রকম কিছু শব্দ ব্যবহার করুন। এর মানে আপনি যে তার কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনছেন, সেটা বুঝাবে।

তবে খেয়াল রাখবেন এগুলো যেন প্রতি শব্দের সঙ্গে সঙ্গে না বলেন। তাহলে ব্যাপারটা মেকি হয়ে যাবে। সিচ্যুয়েশন বা পরিস্থিতি বুঝে কথার উত্তর দিতে হবে।

আমি-আমার এই শব্দগুলো পরিহার করুন:
এটি মানুষকে আপন করে নেয়ার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এর কারণেই মানুষ মানুষকে সব থেকে বেশি অপছন্দও করে থাকে। ধরুন, আপনি কারো সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শুধু নিজের কথা বলেই যাচ্ছেন। আমি এটা করেছি, ওটা করেছি, আমার এটা হয়েছে, ওটা হয়েছে – এই ধরনের কথা মানুষ খুব অপছন্দ করে।

যেমন- কারো সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বললেন, ভাই আমি বিশাল বড় বেতনের একটা চাকরি পেয়েছি। আমার তাতে ভীষণ খুশি লাগছে। আমার মা আমাকে দোয়া করেছেন। আমার বাবা পিঠ চাপড়েছে। আমার ভাই গিফট দিয়েছে। আমার বোন এটা করেছে, ওটা করেছে। এই ধরনের কথায় মানুষ অস্বস্তিবোধ করে।

স্বাভাবিকভাবেই একজন মানুষের সাফল্য কেউ জানতে না চাইলে না বলাই ভালো। আবার ধরুন বললেন, ভাই আমি সমস্যায় আছি। আমার গরু মারা গেছে। আমার বিড়াল মারা গেছে। আমার মোবাইল চুরি হয়েছে- এ ধরনের বিষয়ও আলোচনায় পরিহার করুন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)