‘বাহুবলী’র কারণেই চাঁদে পা ছোঁয়াবে ভারত

মহাকাশ নিয়ে মানুষের আগ্রহের কোন কমতি নেই। আর এই মহাকাশের একটি গ্রহ হলো চাঁদ। আর এটিই যেন মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৬৯ সালের জুলাইয়ের ২০ তারিখ নিল আর্মস্টনের চন্দ্র অভিযানের পরে মানুষ মনে কৌতুহল যেন আরো বেড়ে যায়। অনেকের মাঝেই সেই অভিযান নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এরপর আরো অনেক অভিযান পরিচালিত হলেও সেটি তেমন করে অভিযান পরিচালক থেকে শুরু করে অডিয়েন্সের মনে দোলা দিতে পারে নি।

এবার মানুষকে চাঁদ নিয়ে বিষদ জ্ঞান দিতে আবারো অভিযান পরিচালনা করছে ভারত।

সময়টা ২০০৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর। ‘চন্দ্রযান-১’ নিয়ে চাঁদে পাড়ি জমিয়েছিলো ভারত। তবে সেবার চাঁদের মাটিকে স্পর্শ করতে পারেন নি বরং তার বিভিন্ন কক্ষপথে ঘুরে বেড়িয়েছে চন্দ্রযানটি। এর ১১ বছর পর ১৫ জুলাই রওনা হচ্ছে চন্দ্রযান-২। আর এটি স্পর্শ করতে চাঁদের মাটি। যে মাটিতে আজ পর্যন্ত কোন চন্দ্রযানই পৌঁছাতে পারে নি।

এই অভিযান পরিচালনা করছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। ইসরো চেয়ারম্যান কে শিবন বুধবার ‘চন্দ্রযান-২’ এর লঞ্চিং তারিখ ঘোষণা করলেন। জুলাইয়ের ১৫ তারিখ ভোর ২টা ৫১ মিনিটে রওনা দেবে চন্দ্রযানটি। সেপ্টেম্বরের ৬ বা ৭ তারিখ তার দু’টি অংশ নামবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে, ৭০ ডিগ্রি অক্ষাংশে।

বুধবার চন্দ্রযান-২-এর ছবিও প্রকাশ্যে এনেছে ইসরো। এটির তিনটি অংশ। এক, অরবিটার, যা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করবে। দুই, ল্যান্ডার ‘বিক্রম’, যা চাঁদে দক্ষিণ মেরুর কাছে নামবে। তিন রোভার ‘প্রজ্ঞান’, যা চাঁদের মাটিতে ঘুরে জ্ঞান আহরণ করবে, বিশেষ করে চাঁদের খনিজ সম্পর্কে।

রোভার ‘প্রজ্ঞান’

রোভার ‘প্রজ্ঞান’

আর এমন কাজের জন্য যানটি ১৩টি অনুসন্ধানী যন্ত্র (পে-লোড) নিয়ে যাবে। অরবিটারের পে-লোড ৮টি, বিক্রমের ৩টি ও প্রজ্ঞানের ২টি। যার একটি হলো আামেরিকা স্পেস সংস্থা নাসার। পুরোপুরি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি চন্দ্রযান-২ হলেও গভীর মহাকাশে এটির যাত্রাপথে দিক ও পথনির্দেশ কিন্তু নাসারই ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসরোর চেয়ারম্যান।

সব মিলিয়ে চন্দ্রযান-২-এর ওজন ৩.৮ টন এবং এটি বানাতে খরচ পড়েছে ৬০৩ কোটি টাকা। একে চাঁদের কক্ষপথে যে জিএসএলভি এমকে-থ্রি রকেট নিয়ে যাবে তার নাম দেয়া হয়েছে ‘বাহুবলী’। এটির জন্য খরচ পড়ছে ৩৭৫ কোটি টাকা। প্রায় ৬২০টি শিল্পসংস্থা ও ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবদান রয়েছে চন্দ্রযান এবং রকেট দু’টি তৈরির পিছনে।

বাহুবলীতে চেপে পাঁচ দিনে সাড়ে তিন লাখ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে চন্দ্রযান-২ পৌঁছবে চাঁদের কাছে। এরপর উপযুক্ত কক্ষপথ বেছে নেমে যাবে চাঁদের বুকে। এরপরেই সেটি চাঁদকে মানুষের কাছে আরো বেশি পরিচিত করতে শুরু করবে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)