সাতক্ষীরায় শ্বশুরের কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় প্রাণ দিতে হলো বৌমা আঁখিকে

সাতক্ষীরার ব্রক্ষ্মরাজপুরে গৃহবধূ আঁখি বোস হত্যায় জড়িত লম্পট শ্বশুর সন্তোষ বোস ওরফে এস.কে বোস, শাশুড়ি অশোকা বোস ও স্বামী অরুপ বোসের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার গড়ভাঙ্গা গ্রামের মৃত নীল কোমল বসুর ছেলে ও নিহত গৃহবধূ আঁখি বোসের বাবা গোবিন্দ চন্দ্র বসু।

তিনি এ সময় তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, লম্পট শ্বশুর সন্তোষ বোসের কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় প্রাণ দিতে হয়েছে আমার একমাত্র কন্যা আঁখিকে। শুধু তাই নয় তাকে হত্যার পর মুখে বিষাক্ত দ্রব্য ঢেলে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচারের চেষ্টাও করেছে তারা।

তিনি এ হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন, ২০১৭ সালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রক্ষ্মরাজপুর গ্রামের সন্তোষ বোসের ছেলে অরূপ বোসের সাথে হিন্দু ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী আমার একমাত্র কন্যা আঁখি বোসের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জামাই অরূপ বোস মটর সাইকেল কিনে দেয়ার জন্য আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময় চাপ প্রয়োগ করতো। আমি অনেক কষ্ট করে তাকে মটর সাইকেল কেনার ২ লাখ টাকাও প্রদান করি। এছাড়াও বিয়ের সময় সাড়ে ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ দেড় লাখ টাকা প্রদান করি জামাইকে।

তারপরও আমার কন্যাকে বিভিন্ন সময় তার শ্বশুর, শাশুড়ি ও জামাই শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। বিশেষ করে শ্বশুর সন্তোষ বোস আমার কন্যা খুব সুন্দরী হওয়ায় তাকে বিভিন্ন সময় কু প্রস্তাব দিতো। তার কু প্রস্তাবে আমার কন্যা রাজী না হওয়ায় তার শাশুড়ি অশোকা বোস ও স্বামী অরূপ বোসকে মিথ্যাচার করতেন। এর প্রেক্ষিতে তারাও তাকে মারপিট করতো। কিন্তু লোক লজ্জার ভয়ে আমার কন্যা সব মুখ বন্ধ করে সহ্য করতো। এরই জের ধরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে লম্পট শ্বশুর সন্তোষ বোস ওরফে এসকে বোসের কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় প্রাণ দিতে হলো আমার কন্যা আঁখিকে।

তাকে হত্যার পর তার শ্শুর এস.কে বোস, শাশুড়ি অশোকা বোস ও স্বামী অরূপ বোস পাসপোর্ট ও ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমার শালিকা অপর্ণা বিশ্বাস স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তিনি এ সময় হত্যাকারী লম্পট পরিবারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, গোবিন্দ চন্দ্র বসুর স্ত্রী জোছনা বসু, শালিকা অপর্ণা বিশ্বাস, প্রতিমা হালদার, ভাইরা ভাই পার্থ বিশ্বাসসহ স্থানীয় লোকজন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)