রসায়নে নোবেল পেলেন আর্নল্ড, স্মিথ ও উইন্টার

রসায়ন শাস্ত্রে এ বছর নোবেল বিজয়ী হিসেবে তিন বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বিজয়ী তিনজন হলেন ফ্রান্সিস আর্নল্ড, যৌথভাবে জর্জ স্মিথ ও স্যার গ্রেগরি উইন্টার।

বুধবার স্টকহোমে তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট অর্থ্যাৎ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে তাদের নাম ঘোষণা করেন।

ফ্রান্সিস এইচ আর্নল্ড ‘এনজাইমের বিবর্তন নীতি’ আবিষ্কার করায় এ পুরষ্কার জেতেন তিনি। তিনিই ৫ম নারী যিনি রসায়নে নোবেল পুরষ্কার পেলেন। জর্জ পি স্মিথ ‘ফেজ ডিসপ্লে ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ রোধ‘ এবং স্যার গ্রেগরি পি উইন্টার ফেজ ডিসপ্লে ফার্মাসিউটিক্যালস ব্যবহার করে ক্যান্সার নিরাময়’ বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখায় এ বছর নোবেল পুরষ্কার জেতেন।

এই বছর রসায়নবিদরা ‘জেনেটিক পরিবর্তন এবং নির্বাচন’ বিষয় নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে প্রোটিন বিকাশের মাধ্যমে মানবজাতিকে রাসায়নিক সমস্যা থেকে বাঁচাতে ও শিল্পকে উন্নত করতে নতুন উপকরণ উৎপাদন, টেকসই জৈব জ্বালানি উৎপাদন, রোগ নিরসন এবং জীবন বাঁচানোর জন্য বিবর্তন নীতি প্রয়োগ করেন।

বিজয়ী ফ্রান্সিস এইচ আর্নল্ড ৪৫ লাখ সুইডিস ক্রোনার এবং যৌথভাবে পুরষ্কার বিজয়ী জর্জ পি স্মিথ এবং স্যার গ্রেগরি পি উইন্টার বাকি ৪৫ সুইডিস ক্রোনার মূল্যমানের পুরস্কার ভাগাভাগি করে নেবেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই পুরস্কারের মূল্য দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকা।

ফ্রান্সিস এইচ আর্নল্ড ২৫ জুলাই ১৯৫৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন। এনজাইম, বিপাকীয় পথ, জেনেটিক রেগুলেটরি সার্কিট এবং জীববিজ্ঞানসহ দরকারি জৈবিক ব্যবস্থা তৈরি করার জন্য পরিচালিত বিবর্তন নীতি পরিচালনায় সফলতা পেয়েছেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়ার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বায়োয়েনাইনারিং এবং জীববিজ্ঞান বিভাগের লিনুস পলিং প্রফেসর তিনি।

অন্যদিকে, স্যার গ্রেগরি পল যুক্তরাজ্যে ১৯৫১ সালে ১৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানী, থেরাপিউটিক মনোকোল্যানাল অ্যান্টিবডি। তিনি ক্যামব্রিজের ত্রিনীতি কলেজের ফেলো ছিলেন এবং ২০১২ সালে ক্যামব্রিজের ত্রিনীতি কলেজে অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি পূর্বে মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের গবেষক এবং প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিড রসায়ন বিভাগের প্রধান ছিলেন।

রসায়নের পর শুক্রবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হবে। তবে বিতর্কের কারণে চলতি বছরে সাহিত্যে কোনো পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে না বলেও জানানো হয়েছে।

২০১৭ সালে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপির উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় রসায়নে নোবেল পুরষ্কার জেতেন তিন বিজয়ী। তারা হলেন জ্যাকস ডুবোচেট, জোয়াশিম ফ্রাঙ্ক এবং রিচার্ড হেন্ডারসন। সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছানুসারে নতুন কোনো কিছু উদ্ভাবন, বিশেষ গবেষণা এবং মানব জাতির কল্যাণে অসামান্য অবদান রাখার জন্য প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে দেয়া হয় এ পুরস্কার।

মারিয়া ক্যুরি প্রথম মহিলা বিজ্ঞানী যিনি রসায়নে দু’বার নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এই পোলীয় ও ফরাসি বিজ্ঞানী ১৯০৩ সালে তেজস্ক্রিয়তার উপর গবেষণার জন্য তার স্বামী পিয়ের ক্যুরি এবং তেজস্ক্রিয়তার আবিষ্কারক অঁরি বেকেরেলের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। পরবর্তীতে ১৯১১ সালে আবারো নোবেল পুরস্কার জেতেন তিনি।

এই নারী প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রথম মহিলা অধ্যাপক ছিলেন এবং তিনিই ছিলেন প্রথম মহিলা যার অসামান্য মেধার কারণে ১৯৯৫ সালে প্যান্থিয়নে সমাহিত করা হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)