ভারতে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় দুই শতাধিক জঙ্গি

সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ঠিক দু’ বছরের মাথায় পাক অধিকৃত কাশ্মিরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলো। মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ২৭টি লঞ্চপ্যাড। ঘাপটি মেরে রয়েছে প্রায় ২৫০ জন জঙ্গি। গোয়েন্দা সূত্রে এমনই গোপন তথ্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। এই তথ্যই বাড়িয়ে দিয়েছে আশঙ্কা। কয়েকদিন আগেই আবারও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। নতুন তথ্যে সেই সম্ভাবনা আরও জোরালো হচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্রের খবরে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের সার্জিকাল স্ট্রাইকে যে লিপা উপত্যকায়, পাক জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছিল ভারতীয় সেনা, সেখানেই আবারও গজিয়ে উঠেছে নয়া লঞ্চপ্যাড। এছাড়া, চাকোঠি, বারারকোট, শার্দি, জুরা এবং হাজিপুরে উপস্থিতি রয়েছে লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিদের।

পাশাপাশি, পাক অধিকৃত কাশ্মিরের ফরোয়ার্ড কাহুতায় ঘাঁটি গেড়েছে হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গিরা। এরা প্রত্যেকে আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদের উদ্দেশ্য, দক্ষিণ কাশ্মিরে ঢুকে ভারতীয় সেনাদের ক্ষতি করা। একইসঙ্গে পাক জঙ্গিদের লক্ষ্য, কাশ্মিরের পুলিশকর্মী ও অফিসারদের অপহরণ ও হত্যা করে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। যাতে মুসলিম পুলিশ অফিসাররা ভয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন।

পাক অধিকৃত কাশ্মিরের লিপা, চানানিয়ান, মান্দাউকালি, নৌকতের জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে ২৫ থেকে ৩০ জন লস্কর জঙ্গি এখনই ভারতে ঢোকার জন্য প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে। এদের আসল লক্ষ্য, কাশ্মিরের আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট বানচাল করা। এরা সরাসরি হান্দোয়ারা, গুরেজ, সোপোর, বান্দিপোরা, জাজারকোটলিতে ঢুকে হামলা চালাতে চায়।

২০১৬ সালের জুলাই মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর কাশ্মিরে বেড়ে গিয়েছে সন্ত্রাসবাদীদের হামলা। উরি হামলার মতো ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে ১৯ ভারতীয় জওয়ানের। এরপরেই চরম প্রত্যাঘাত করে ভারতীয় সেনারা। সেবছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পাক অধিকৃত কাশ্মিরে ঢুকে জঙ্গিদের সাত থেকে আটটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করে দেয় সেনারা।

হঠাৎ আঘাত কাটিয়ে উঠতে সময় লাগে সন্ত্রাসীদের। ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, কয়েকদিন চুপ থাকলেও এরপরই উপত্যকায় বেড়ে যায় পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির অনুপ্রবেশ এবং জম্মু-কাশ্মিরের পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে টার্গেট কিলিংয়ের সংখ্যা।

সেই সঙ্গে বেড়েছে ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনাও। এই ঘটনা আরও একটি বিষয় প্রমাণ করে বলে উল্লেখ করেছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। নব নিযুক্ত পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করতে উদ্যোগী হলেও রাওয়ালপিণ্ডি যে একদমই তাতে রাজি নয় এবং পাক সেনা ও আইএসআইয়ের মদতেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো যে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে এই তথ্যই জোরালো হচ্ছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)