দেবহাটা ইটভাটার দূষিত ধোয়ায় পানের বরজ, ফসল ও গাছ গাছালির ব্যপক ক্ষতি

দেবহাটার হাদিপুরে অপরিকল্পিত নির্মিত ইটভাটার দূষিত কালো ধোয়ায় পানের বরজ, ক্ষেতের ফসল, গাছ গাছালির ব্যপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। এঘটনায় ভুক্তভোগীরা পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা গ্রামের মৃত মাজেদ আলী গাজীর পুত্র আব্দুর রশিদ গাজী হাদিপুর এলাকায় প্রায় ৪০বিঘা ফসলি জমি লীজ নিয়ে সেখানে গড়ে তুলেছে রুপা ব্রিক্স নামে ইট ভাটা। এখানে প্রতিনিয়ত নিয়ম বহিঃভুত ভাবে পোড়ানো হয় বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ সহ বিভিন্ন ক্যমিক্যাল। যার বিষক্ত কালো ধোয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, ক্ষতিসাধন হচ্ছে আশে পাশের জমির ফসল, গাছ-গাছালি ও প্রানীজ সম্পদ। আর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ কৃষকরা। অপর দিকে ইট ভাটার আশপাশের বসবাসকারী পরিবার গুলো পড়েছে বিপাকে। ভাটার কালো ধোয়ায় মানব সম্পদ ও প্রাকৃতিক জীব ও বৈচিত্রের জন্য হুমকি স্বরুপ। তাছাড়া কার্বণ নিঃসরণের কারণে জলবায়ু যে হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে তারও অন্যতম কারণ। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, নদী ভাঙ্গন ও স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণেও কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে ব্যাপক হারে। ইটভাটা থেকে যে দূষিত গ্যাস ও তাপ নির্গত হয় তা আশে-পাশের জীবজন্তু, গাছ-পালা এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে এবং মানুষের স্বাস্থ্যহানির কারণ ঘটাচ্ছে। ইট ভাটার জন্য অনেক সময় ফল গাছে কোনো ফলই ধরে না, বা ধরলেও তা অকালে ঝড়ে পড়ে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এক সময় দেশে কৃষি জমির পরিমাণ হ্রাস পাবে । খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা ব্যাহত হবে। ইট ভাটায় কয়লার ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকলেও বেশি লাভের আশায় কয়লার পরিবর্তে অবৈধভাবে পুড়ানো হচ্ছে কাঠ। নিধন করা হচ্ছে বৃক্ষ। উজাড় করা হচ্ছে বনভূমি। আর অধিক লাভের আশায় ভাটা কতৃপক্ষ কয়লার পাশাপাশি টায়ারের কালি, সোয়াবিন তেলের দূষিত গাদ ব্যবহার করছে ইট পোড়ানোর কাজে। এতে বিনষ্ট হচ্ছে আমাদের জীব বৈচিত্র ও দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ব্যপক হারে ক্ষতি হচ্ছে ক্ষেতের ফসল। আর এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে স্থানীয় কৃষকরা। এব্যাপারে স্থানীয় পান চাষী নূর ইসলাম জানান, ঈদের ১দিন পূর্বে ভাটার দূষিত কালো ধোয়ায় আমার ২বিঘা জমির পানের বরজ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া একই এলাকার শফিকুল ইসলাম জানান, ভাটার দূর্গন্ধযুক্ত দূষিত কালো ধোয়ায় আমার ১বিঘা পানের বরজ ধ্বংষের মূখে। আমরা ভাটার মালিককে জানালেও সে কোন দিনও বিষয়টি দেখতে আসিনি।

হাদিপুর এলাকার আব্দুল মজিদ জানান, ইটের ভাটার কালো ধোয়ায় আমার কলা, কচু, সবজি এমনকি পুকুরের মাছেরও ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া একই এলাকার এবাদুল ইসলাম জানান, আমার দেড় বিঘা জমির আখ ও ১০কাটা জমির পটল গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও ইট ভাটা থেকে প্রবাহিত কালো ধোয়ার ছোয়ায় ভাটার সামনের কয়েকটি সরকারী বড় বড় বৃক্ষ, শত শত কলাগাছ, ধানক্ষেত এমনকি বিভিন্ন প্রজাতির ঘাসের ডগা পর্যন্ত শুকিয়ে গেছে। এতে করে কৃষক সহ স্থানীয়রা পড়েছে চরম হুমকির মুখে।
এ বিষয়ে ইট ভাটা মালিক আব্দুর রশিদ বলেন, এটা আমার ভাটার দূষিত ধোয়া নয়। যদি আমার ভাটার ধোয় হয় তাহলে আমি কৃষকদের ক্ষতি পূরন দেব।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিমউদ্দীন জানান, বিষয়টি আমি জানি না। আপনাদের কাছেই শুনলাম। এমন ঘটনা ঘটলে ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)