আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বকর্মা পূজা

সনাতন ধর্মের একটি ধর্মীয় উৎসব। দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার আশিস কামনায় এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বকর্মা চতুর্ভুজ ও গজারূঢ়। তাঁর আকৃতি অনেকটা কার্তিকের মতো।

বেদে বিশ্বকর্মাকে পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তারূপে বর্ণনা করা হয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস মতে তিনি বিশ্বের তাবৎ কর্মের সম্পাদক। তিনি শিল্পসমূহের প্রকাশক, অলঙ্কার শিল্পের স্রষ্টা, দেবতাদের গমনাগমনের জন্য বিমান নির্মাতা ইত্যাদি। অর্থাৎ শিল্পবিদ্যায় তাঁর একচ্ছত্র অধিকার। তাই যাঁরা শিল্পকর্মে পারদর্শিতা লাভ করতে চান, তাঁরা বিশ্বকর্মার অনুগ্রহ কামনা করেন। রামায়ণে বর্ণিত অপূর্ব শোভা ও সম্পদবিশিষ্ট লঙ্কা নগরীর নির্মাতা বিশ্বকর্মা বলে কথিত। তিনি উপবেদ, স্থাপত্যবেদ ও চতুঃষষ্টিকলারও প্রকাশক। দেবশিল্পিরূপে তিনি দেবপুরী, দেবাস্ত্র ইত্যাদিরও নির্মাতা। জনশ্রুতি আছে যে, পুরীর প্রসিদ্ধ জগন্নাথমূর্তিও বিশ্বকর্মা নির্মাণ করেন।

ভাদ্রমাসের সংক্রান্তিতে কলকারখানায় বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে বিশ্বকর্মার পূজা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য দেব-দেবীর মতোই মূর্তি গড়ে বিশ্বকর্মার পূজা করা হয়। সূতার-মিস্ত্রিদের মধ্যে এঁর পূজার প্রচলন সর্বাধিক। তবে বাংলাদেশে স্বর্ণকার, কর্মকার এবং দারুশিল্প, স্থাপত্যশিল্প, মৃৎশিল্প প্রভৃতি শিল্পকর্মে নিযুক্ত ব্যক্তিগণও নিজ নিজ কর্মে দক্ষতা অর্জনের জন্য বিশ্বকর্মার পূজা করে থাকেন।

ভগবান শ্রীশ্রী বিশ্বকর্মা প্রণাম মন্ত্র:
দেবশিল্পী মহাভাগ দেবা-নাং কার্যসাধক কর্মন্নমস্ তুভ্যং সর্বাভীষ্টপ্রদায়ক ॥

জেনে নিন প্রতি বছর একই দিনে বিশ্বকর্মা পুজো হওয়ার কারণ কি?

প্রতি বছর একই দিনে বিশ্বকর্মা পুজার দিন৷ সাধারণত ১৭ সেপ্টেম্বর এই পুজা হয়ে থাকে৷ এর কারণ হল হিন্দুদের উৎসবের মধ্যে একমাত্র এটিই পালন করা হয় সূর্যকে ভিত্তি করা ক্যালেন্ডার অনুসারে৷ কিন্তু অন্যান্য পুজা বা উৎসব পালন করা হয় চন্দ্রকে ভিত্তি করা ক্যালেন্ডার অনুসারে৷ এই দিনটি পালন করা হয় যেদিন সূর্য সিংহ রাশিকে ত্যাগ করে কন্যা রাশিতে প্রবেশ করে, যার জন্য এদিনটিকে বলা হয় কন্যা সংক্রান্তি দিবস৷

বিশ্বকর্মা পুজা করা হয় নিদিষ্ট সময়ে৷ সংক্রান্তি অনুসারে বিশ্বকর্মা পুজোর উপযুক্ত সময় হল দুপুর ১২টা ৫৪ মিনিট৷

হিন্দুদের প্রচলিত ধারণা অনুসারে বিশ্বকর্মা হল যন্ত্রের দেবতা, তাঁর হাতেই গড়ে উঠেছিলেন গোটা বিশ্ব৷ অন্যান্য দেবতাদের মতো বিশ্বকর্মা পুজার জন্য একটি দিন বরাদ্দ রয়েছে৷ তবে তাঁকে বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের রূপকার ধরলে তিনি অবশ্যই এই ধরনী গড়ে ওঠার আগে থেকেই ছিলেন বলে ধরা হয়৷ সেক্ষেত্রে অবশ্য কোনও বিশেষ দিনটি তাঁর জন্ম অথবা পুজার দিন বলে ধরা উচিত নয়৷ যদিও অনেকেই বিশ্বকর্মার পুজা করেন তাঁকে স্মরণ করতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে৷

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)