কালিগঞ্জে ৩২টি সরকারি গাছ কেটে সাবাড় করলেন ইউপি চেয়ারম্যান!

কালিগঞ্জের ৪নং দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ৫নং ও ৬নং ওয়ার্ডে সরকারি রাস্তার পাশের প্রায় ১৫ বছর আগে লাগানো ২৮টি ফলবান আম গাছ ও মেহগনী গাছ এবং ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরের ৪টি বড় শিশুফুল গাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকার। রাস্তার পাশের গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে (সোনাতলা গ্রাম) কর্মকার পাড়া এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সরকারি রাস্তার পাশে ১৭টি আম ও মেহগনী গাছ কাটা। বাকি ৩টি গাছ কাটা শেষ পর্যায়ে।

গাছ কাটা  শ্রমিক উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামের এবাদ আলীর গাজীর ছেলে রাশেদ গাজী (৩৮) ও মুকুন্দ মধুসুদনপুর গ্রামের আলী গাজীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৪০) জানান, তারা শ্রমিক হিসেবে গাছ কাটার কাজ করছেন। গাছগুলো কিনেছেন বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জয়পত্রকাটি গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী সুজিত মন্ডল (৪২)। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বর হাবিবুল্যাহ গাজী পুটুর এলাকায় ৮টি গাছ কাটা শেষ করার পর বিকেল থেকে ৬নং ওয়ার্ডে খালেক মেম্বরের এলাকায় ২০টি গাছ কাটার কাজ করছেন।

৬নং ওয়ার্ডের মেম্বর আব্দুল খালেক সরদার (৪৮) জানান, প্রায় ৩মাস পূর্বে ইউপি চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকার কিছু গাছ কেটে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এর প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদে রেজুলেশন করার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে কাঠ ব্যবসায়ী সুজিত মন্ডলের কাছে ৫ নং ওয়ার্ডে ৮টি মেহগনী গাছ ১৫ হাজার টাকায় এবং ৬নং ওয়ার্ডের মধ্যে মোট ২০টি আম ও মেহগনী গাছ ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরের ৪টি শিশুফুল গাছ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। গাছ বিক্রির মোট ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিষদের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসী জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে প্রয়াত মেম্বর সুবল মন্ডল পরিবেশ রক্ষায় ও মানুষের কল্যাণে গাছগুলো রোপন করেন। অথচ সরকারি রাস্তার পাশে ফলবান আম গাছসহ ছোট বড় মিলিয়ে ২৮ টি গাছ কেটে ফেলা হলো। এটা অত্যন্ত দু:খজনক ঘটনা। তারা প্রশাসনের কাছে গাছ কাটার বিষয়ে সুষ্ঠু প্রতিকার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকার বলেন, রাস্তায় বিদ্যুৎ লাইনের কাজ হচ্ছে। এজন্য রেজুলেশন করে গাছগুলো কেটেছি। গাছ কাটার জন্য ইউএনও সাহেবের পারমিশন নেয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের অনুমতি নেয়া হয়েছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোট ছোট গাছ। এজন্য জেলা পরিষদকে বিষয়টি জানানো হয় নি।

কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছ কাটার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে কী আমার জানা নেই। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)