খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এর ১৪৫ তম জন্মবার্ষিকী

হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এর ১৪৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২২ ডিসেম্বর তাঁর জন্মভিটে সাতক্ষীরার নলতা শরীফে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশন এ সেমিনারের আয়োজন করে। খানবাহাদুর আহছানউল্লা ছিলেন অবিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা-বিজ্ঞানী, কবি ও সাহিত্যিক, দার্শনিক ও ছুফী সাধক। তিনি আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলা একাডেমির প্রথম ফেলো। ১৮৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসের শনিবারে তিনি সাতক্ষীরার নলতায় জন্মগ্রহণ করেন।

নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের সভাপতির মুহাম্মদ সেলিমউল্লার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। সেমিনারে সেমিনারে বক্তারা খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা’র ওপর সমন্বিত গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন ভারতবর্ষে মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত। শিক্ষায়-দীক্ষায়, সাহিত্যে-সাধনায় তিনি যদি উদ্যোগ না নিতেন তবে বাংলার মুসলমানরা আজকের অবস্থায় পৌছাতে পারতো না। তিনি একাধারে ছিলেন পূর্ণ ধার্মিক আবার পূর্ণ আধুনিক। আধুনিকতা আর ধার্মিকতার সমন্বয় ঘটিয়ে তিন যে দর্শনের কথা বলে গেছেন তা কল্যাণের দর্শন। তাঁর জীবন, কর্ম ও সাহিত্যের ওপর খন্ডিত গবেষণা রয়েছে, আহ্ছানিয়া মিশন ও খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিস্টিটিউটের উচিৎ সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করা।
লেখক ও খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিস্টিটিউটের গবেষক মো. মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে ‘আহ্ছাননামা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাহিত্যিক আধ্যাপক গাজী আজিজুর রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মজিবর রহমান, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মনিমুল হক, ছায়ানীড় প্রকাশনীর পরিচালক মো. লুৎফর রহমান, খানবাহাদুর আহছানউল্লা ইনিস্টিউিটের পরিচালক এ এফ এম এনামুল হক ও নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সহ-সভাপতি ড. কাজী আলী আজম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মজিবর রহমান খানবাদুর আহ্ছানউল্লা’র ছুফী দর্শনে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ড. রহমান তার আলোচনায় বলেন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খানবাহাদুর আহছানউল্লার দর্শন পড়ানো উচিৎ, যে কাজটি ইতোমধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের পাঠ্যে আমরা অন্তর্ভুক্ত করেছি। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিস্টিটিউটের পরিচালক এ এফ এম এনামুল হক বলেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন অবিভক্ত বাংলার পূণর্জাগরণের সব্যসাচী কারিগর। বাংলা একাডেমি ও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তা পেলে ইনিস্টিটিউটের উদ্যোগগুলো বাস্তব রূপ পাবে। তিনি বলেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিস্টিটিউট ইতোমধ্যে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ওপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গবেষণা শুরু করেছে। ছায়ানীড়ের পরিচালক লুৎফর রহমান বলেন, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন শুদ্ধাচারী মানুষ। বাংলা সাহিত্যে তার যে শতাধিক র্মূল্যবান গ্রন্থ সেখানে তাঁর শুদ্ধাচারের প্রমান পাওয়া যায়। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার মতে রুচি মার্জিত করাই সাহিত্যের কাজ, রুচি কলুষিত করা নয়।

খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ১৪৫ তম জন্মবার্ষিকীর সেমিনারে আরও উস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব সাজেদুল কাইয়ুম দুলাল, যুগ্ম সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়; নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান, সহ-সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক, সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বাবু রবীন্দ্রনাথ দাস।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)