বড় হারে সিরিজ খোয়াল বাংলাদেশ

সিরিজ নির্ধারণী শেষ ম্যাচে ১৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। লিটন দাসে শুরুটা ভালো করলেও ৫০ রানের বড় ব্যবধানে হেরে সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ।

প্রথমবারের মতো কোনো পূর্ণাঙ্গ সিরিজের সবকয়টি সিরিজ জয়ের সামনে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ শুরুতেই কবজা করে বাংলাদেশ। সিলেটে প্রথম টি-টোয়েন্টি হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ। ফলে তৃতীয় ম্যাচটি টাইগারদের জন্য হয়ে উঠেছিল অলিখিত ফাইনাল।

সিরিজ নির্ধারণী ১৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৪০ রানে অল আউট হয়েছে বাংলাদেশ। তবে স্কোর বোর্ড দুই দলেরই যেমন দেখাচ্ছে তেমনটা হওয়ার আলামত ছিল না শুরু থেকে। বাংলাদেশ শুরু করেছিল ঝড় দিয়ে কিন্তু শেষ হয়েছে হতাশা। অন্যদিকে উইন্ডিজেরও তাই। যতটা রান হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রণে।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উইন্ডিজ লুইস ও হোপে যে ঝড়ো গতিতে শুরু করেছিল তাতে বাংলাদেশের বোলারদের দিশেহারাই হতে হয়েছে। আগের দুই ম্যাচে রান না পাওয়া এভিন লুইস যেন সব ঝাল আজই ঝাড়লেন।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করতে থাকেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। আবু হায়দার রনির এক ওভারে তো চার ছক্কাই হাঁকালেন। মাত্র ৩.১ ওভারে দলীয় অর্ধশতক তুলে নেয় সফরকারী উইন্ডিজ। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল সফরকারীদের দলীয় ইনিংস আড়াইশ অনায়াসেই পেরিয়ে যাবে। ৩৬ বলে ৮৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ৮টি ছক্কা ও ছয়টি চার হাঁকান লুইস। লুইসের সামনে বাংলাদেশের বোলারদের যেন নিছক পাড়ার বোলারই মনে হয়েছে। শেষমেশ লুইসকে বোল্ড করে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপরেই সফরকারীদের চেপে ধরে বাংলাদেশ। সাকিব-মুস্তাফিজ ও রিয়াদের তিন উইকেটে শেষ অব্দি ১৯০ রানে সবকয়টি উইকেট হারায় তারা।

জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই রান আউটে কাটা পড়লেন তামিম। যাওয়ার আগে করেছেন ৮ রান। তবে আশা জাগিয়েছিলেন লিটন। আগের দিনের মতোই উইন্ডিজের শট বলের জবাব দিতে শুরু করেছেন তিনি। এরপরেই মাঠে চলল এক নাটক।

ম্যাচের চতুর্থ ওভারে ঘটে চলল এক নাটক। ঝড়ো শুরু করা লিটন থমাসের পঞ্চম বলে শট করলেন। কভারে ক্যাচ হলেন লিটন। আর সেটিই আম্পাইয়ার তানভীর নো বল কল করেন। কিন্তু এ নিয়ে জোর প্রতিবাদ করে উইন্ডিজ খেলোয়াড়রা। এরপর বেশ খানেক সময় মাঠের ভেতরে তর্ক-বিতর্ক চলে। রিপ্লাইতে দেখা যায় বলটি নো ছিল না। পর পর দুই বল নো না হওয়ার পরেই আম্পায়ারের বারবার ভুল কলে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়েছে খোদ বাংলাদেশি সমর্থকরাও। একই সঙ্গে তারা আম্পায়ারের মান নিয়েও তোলেন প্রশ্ন।

তর্ক-বিতর্ক শেষে খেলা শুরু হল প্রায় ১০ মিনিট বাদে। এরপরেই যেন দেশী আম্পায়ারের ভুলের প্রায়শ্চিত্য করতে নামে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। একের পর এক উইকেট বিলিয়ে এসেছেন নিয়মিত বিরতিতেই।

অ্যালেনের বলে দুইজনই কটরেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সাকিব ও সৌম্য। সাকিব শূন্য রানে ফেরেন। ঠিক এক ওভার পরেই ব্যক্তিগত এক রানে পয়েন্টে কিমো পলের বলে অ্যালেনকে ক্যাচ দিয়েছেন মুশফিক। দাঁড়াতে পারেননি মাহমুদউল্লাহও। ৯ বলে ১১ রানে ফিরেছেন। সের কিমো পলের বলে ব্রাথওয়েটকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। পরের বলেই রুদাফোর্ডের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন আরিফুলও। বোলার সেই পলই। এরপরেই হার মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায় স্বাগতিকদের। এরপর দর্শকদের যা একটু বিনোদন দিলেন মিরাজ ও আবু হায়দার রনি। ১৮ বলে ১৯ রানের ইনিংসে মিরাজ হাঁকিয়েছেন ১ ছয় ও এক চার। এছাড়া ব্যাটটা যে ভালোই চালান বুঝিয়েছেন রনি। তার ১৭ বলে ২২ রানের ইনিংসে ছিল ৩ চার ও এক ছক্কা।

উইন্ডিজের কিমো পল নিয়েছে ১৫ রানে চার উইকেট।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)