ফ্রন্ট জিতলে ইউনূস প্রধানমন্ত্রী?
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ড. মুহম্মদ ইউনূসের নাম বলেছে। মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, নির্বাচনে জয়ী হলে তারা ড. মুহম্মদ ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী করার বিষয়টি ভাবছে। গতকাল শনিবার মার্কিন দূতাবাসের দু’জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দেখা করেন ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে। ড. কামালের বেইলী রোডের বাসভবনে রাত আটটার কিছু পর তারা সাক্ষাৎ করেন। ড. কামাল হোসেনের গাড়িতে হামলার বিষয়ে তারা খোঁজখবর নেন। গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে কে বা কারা হামলা করে। মার্কিন দূতাবাসের ঐ দুই কর্মকর্তা ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। তারা চলমান নির্বাচন প্রচারণা নিয়েও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়াকের কথা বলেন।
ড. কামাল হোসেন অভিযোগ করেন যে, সরকার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় বিরোধী পক্ষকে সরকার কোনো সুযোগই দিতে রাজি নয়। ড. কামাল অভিযোগ করেন যে, সরকার বিরোধী পক্ষকে বাধা দেওয়ার জন্য প্রশাসনকেও ব্যবহার করছে। মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানতে চান এরকম পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কী করবে। জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা নির্বাচনের মাঠেই থাকবো। আমি সবাইকে বলেছি মাটি কামড়ে থাকতে। ড. কামাল বলেন, আমরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করবো জনগণকে ভোটকেন্দ্রে নিতে। জনগণ ভোটকেন্দ্রে গেলে ‘ভোট বিপ্লব’ হবে বলে ড. কামাল হোসেন মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদের বলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ড. কামালের কাছে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানতে চান যে, নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তাঁরা (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) কতটা আশাবাদী। জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, নির্বচান ন্যূনতম নিরপেক্ষ হলেই ঐক্যফ্রন্ট বিপুল ভোটে জয়ী হবে। সেক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী কি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল হবেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. কামাল বলেন, ‘না’ আমি এমনটা ভাবছি না। আমি দলের বাইরে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী করার কথা ভাবছি।‘ এটা আমি ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকেও আলোচনা করেছি। এতে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোরও সম্মতি আছে বলে ড. কামাল উল্লেখ করেন। মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা জানতে চান এরকম ব্যক্তি কে? উত্তরে ড. কামাল বলেন, ‘এরকম ব্যক্তি অনেক আছেন। তাঁরা সরাসরি রাজনীতিতে আসতে ভয় পান। যেমন শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূস।’ মার্কিন কর্মকর্তারা জানতে চান, সেটা কীভাবে সম্ভব। তিনি তো নির্বাচন করছেন না। জবাবে ড. কামাল বলেন, বিএনপি মহাসচিব এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন দুটি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের যে কেউ একটি আসন ছেড়ে দিলে ড. ইউনূস সেখানে প্রার্থী হবেন। আমি চেষ্টা করবো তিনি যেন সেখানে সর্বসম্মতভাবে নির্বাচিত হন। কিন্তু ড. মুহম্মদ ইউনূস কি এরকম প্রস্তাবে রাজী হবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. কামাল বলেছেন, ‘তিনি বিষয়টি জানেন।’
উল্লেখ্য, শান্তিতে নোবেল জয়ের পর ড. মুহম্মদ ইউনুস একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে তা বালিত করে দেন। ওয়ান ইলেভেনের অন্যতম রূপ পরিকল্পক তাকে মনে করা হয়। গ্রামীন ব্যাংক, পদ্মা সেতু ইত্যাদি ইস্যুতে তার সঙ্গে সরকারের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ড. ইউনুস বর্তমানে বেশীর ভাগ সময় বিদেশেই অবস্থান করেন।