আশাশুনি এপি ওয়ার্ল্ড ভিশনে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
আশাশুনি এপি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ও ইনহেল্ডার প্রজেক্টের ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একাধিক সূত্রে প্রকাশ, নিয়োগ পরীক্ষা থেকে শুরু করে ভাইবা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও মেধাবীদের বাদ দিয়ে স্বজন প্রীতি ও গোপনে অর্থের বিনিময়ে এমন নিয়োগ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পরীক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, চলতি বছরের অক্টোরব মাসে কমিউনিটি ফ্যাসিলিটেটর, কমিউনিটি প্রমোটর, আল্ট্রা পোর গ্রাজুয়েশন ফ্যাসিলিটেটর, স্পন্সরশীপ ফ্যাসিলিটেটর, ভ্যালুচেইন ডেভেলপমেন্ট ফ্যাসিলিটেটর, কমিউনিটি ফ্যাসিলিটেটর ওয়াশ এবং ডাটা এন্ট্রি পদে নিয়োগ দেন আশাশুনি এপি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ। জানাগেছে নিয়োগ প্রকাশের পর প্রায় ৩২৯ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। যার লিখিত পরীক্ষা ৪ঠা নভেম্বর আশাশুনি আলিয়া মাদ্রাসা কক্ষে বেলা ১.৩০ টায় হওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় প্রায় বিকাল ৩টার সময়। পরীক্ষা শেষে তড়িঘড়ি করে এক থেকে দুইদিন পর মোবাইলে ভাইবার জন্য ডাকা হয় কিছু কিছু প্রার্থীদের। এর জন্য পত্রিকায় বা নোটিশ বোর্ডে কোন তালিকা প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের। অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে অনেক ফ্যাসিলিটেটরদের আগে থেকেই বলা হয়েছে তারা কে কোন পদে পরীক্ষা দেবে এবং তাদেরকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানাগেছে। তারই সূত্র কুল্যা গ্রামের বাবুল সরদারের কন্যা খাদিজা খাতুন গত বছর কমিউনিটি প্রমোটরে পরীক্ষা দিলেও সে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। সে তার মেধা যাচাইয়ে ব্যর্থ হলেও পরবর্তীতে তাকে আল্ট্রা পোর গ্রাজুয়েশনে নিয়োগ দেওয়া হয়। এবছর তাকে আগে থেকেই বলা হয়, সে যেন স্পন্সরশীপ প্রোজেক্টে আবেদন করে এবং সে উক্ত প্রোজেক্টে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানাগেছে। এছাড়া বিগত বছরে স্পন্সরশীপ প্রোজেক্টে চাকুরীকৃত ফ্যাসিলিটেটর মহিষাডাঙ্গা গ্রামের পবিত্র সরকারকে আল্ট্রা পোর গ্রাজুয়েশন ফ্যাসিলিটেটর পদে আবেদন করার কথা বলা হয় এবং তাকেই উক্ত পদে উত্তীর্ণ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে গত বছরের একজন স্পন্সরশীপ ফ্যাসিলিটেটর মিনারুল ইসলাম জানান, আমার ২বছর ৬মাসের অভিজ্ঞতা থাকা সত্বেও লিখিত পরীক্ষার আগেই আমাকে বাদ দেওয়া হয়। যেন আমার পদের স্থলে অন্য কাউকে নিয়োগ দিতে পারে। এছাড়া একাধিক ব্যক্তি জানান, আমাদের পরীক্ষা ভাল হওয়া সত্বেও এপি কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে বাদ দিয়ে স্বজন প্রীতি করে নিজেদের মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়োগ পাইয়ে দিয়েছেন। এছাড়া ইনহেল্ডার প্রোজেক্টের আল্ট্রাপোর গ্রাজুয়েশন ফ্যাসিলিটেটর পদে কুল্যা ইউনিয়নে ২জন ও বড়দল ইউনিয়নে ২জন করে ফ্যাসিলিটেটর নেওয়া কথা থাকলেও ভাইবা বোর্ডের পর একজন করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ যেন শুধু মাত্র লোক দেখানো নিয়োগ বোর্ড। এব্যাপারে আশাশুনি এপি ওয়ার্ল্ড ভিশনের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার ডেভিট স্বপন শাহ জানান, লিখিত পরীক্ষার পরে আমরা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের মোবাইলে ভাইবার জন্য ডেকেছি এবং ভাইবায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছে তাদেরকে মোবাইলে বৃহস্পতিবার সকালে অফিসে ডাকা হয়েছে। একাধিক পরীক্ষার্থী এ প্রতিবেদককে বলেন আমারা ভাল পরীক্ষা দিয়েছি, আমাদের কোন ত্রুটির কারণে বাদ দেওয়া হলো এটা এপি কর্তৃপক্ষ কোন তালিকা বা মৌখিক ভাবে জানাচ্ছেন না। প্রোগ্রাম অফিসার মানিক হালদারের কাছে মোবাইলে পরীক্ষার খাতা কল করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের অফিসিয়াল বিষয়, লিখিত পরীক্ষার খাতা কল করার কোন সুযোগ নেই। এপি ম্যানেজার মেথিল্ডা মেন্ডিস জানান, এবিষয় এখন কিছু বলতে পারবনা। রবিবার অফিসে গিয়ে কথা বলবো। এমন একটি আন্তর্জাতিক বে-সরকারী স্বনাম খ্যাত প্রতিষ্ঠানের হালচিত্রের খবরে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্ত ভোগী পরীক্ষার্থী ও এলাকার সচেতন মহল।