পাটকেলঘাটাসহ প্রত্যন্ত এলাকাগুলো থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে জাতীয় ফুল শাপলা
বিলের ধারে ফুটে থাকা সারি সারি শাপলা ফুল দেখতে যেমন বৈচিত্র্যময় তেমনি ধরণীর বুকে লাল সবুজের সমারোহে যেন মনোমুগ্ধকর দৃশ্যাবলীর একটি। শাপলা শুধু শাপলা ফুলই নয় এটি আমাদের জাতীয় ফুল। সাধারণ নভেম্বরের শুরুতে শীতের আগমনী বার্তার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বিলে ঝিলে কিংবা পুকুরে এর দেখা মেলে। গ্রাম ও শহুরে মানুষের কাছে এটি সবজি হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। অনেকে আবার শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। লাল শাপলার অনেক ঔষধি গুনও রয়েছে।
পাটকেলঘাটার প্রত্যন্ত অ লসহ বিভিন্ন স্থানে এখনও সাদা শাপলা দেখা মিললেও লাল, হলুদ, বেগুনী শাপলা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় খাল-বিল ও নিচু জায়গায় পানি জমে থাকলে সেখানেই প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা। এক দশক আগেও উপজেলার বিভিন্ন অ লে প্রচুর শাপলা ফুল দেখা মিলত। তখন পুকুর খাল বিল ও জলাশয়গুলোতে লাল, গোলাপি, সাদা, বেগুনি, নীল ও বিরল প্রজাতির হলুদ শাপলা ফোঁটার কারণে চারিদিকে নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে প্রাকৃতিক দৃশ্যে পরিণত হতো। সাধারণত শাপলা ফুল দিনের বেলা ফোঁটে এবং সরাসরি কান্ড ও মুলের সাথে যুক্ত থাকে। শাপলার পাতা আর ফুলের কান্ড বা ডাটি বা পুষ্পদন্ড পানির নিচে মুলের সাথে যুক্ত থাকে। আর এই মুল যুক্ত থাকে মাটির সাথে এবং পাতা পানির উপর ভেসে থাকে। মুল থেকেই নতুন পাতার জন্ম হয়। পাতাগুলো গোল এবং সবুজ রঙ্গের হয়। কিন্তু নিচের দিকে কালো রং। ভাসমান পাতাগুলোর চারিদিক ধারালো হয়।
বর্তমানে সাদা প্রজাতির শাপলাগুলি বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেলেও দেখা যাচ্ছে না গোলাপি, বেগুনি, নীল ও হলুদ শাপলা। এসব শাপলা কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাওয়ার পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে বলে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়। কারো মতে কপোতাক্ষের নাব্যতা হ্রাস, খাল বিল ও জলাশয় ভরাট করে কৃষি জমি তৈরী, ঘরবাড়ি তৈরী, ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার এবং জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় বিলে পুকুরে বর্ষা মৌসুমে নানা রংয়ের শাপলার বাহারী রুপে মানুষের নয়ন জুড়িয়ে যেতো। ছোটদের খুবই প্রিয় এই শাপলা। শাপলার ড্যাপ শিশুদের প্রিয় খাবার এবং গ্রামের লোকেরা ড্যাপ দিয়ে খই ভেজে মোয়া সহ বিভিন্ন প্রকার সু-স্বাদু খাবার তৈরী করে।