মুহূর্তে মুহূর্তে পাল্টাচ্ছে সাতক্ষীরা জেলার নির্বাচনী হিসাব
মুহূর্তে মুহূর্তে পাল্টাচ্ছে সাতক্ষীরা জেলার নির্বাচনী হিসাব। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ জেলার তিনটি আসনে রোববার দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। এরপক্ষে বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। রাতেই জাতীয় পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে পাওয়া যায় জেলায় জামাতের তিন প্রার্থীর নাম। সে আলোচনা শেষ হবার আগেই সোমবার বিকালে জানা যায় জেলায় জাতীয় পার্টির তিন প্রার্থীর নাম। এ খবরের খই ফোটা শেষ হবার আগেই সন্ধ্যায় লটারীতে সাতক্ষীরা সদর আসনে ভাগ্য নির্ধারণ হয়- এই আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। এরফলে ইভিএম ব্যবহারে ভোট কারচুপি বা রাতে ভোট কাটার কোন সুযোগ নেই। এমনকি নির্ধারিত সময়ের আগে কিম্বা পরে ইভিএম চালু করা যাবে না। এটি হ্যাক করারও কোন সুযোগ নেই। কেউ ইভিএম মেশিন চুরি বা ছিনতাই করতে পারবে না। চুরি বা ছিনতাই করলেও তাতে কাজ হবে না। ইভিএম পরিচালিত প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে থাকবে সেনাবাহিনী।
সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কোন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। তবে মহাজোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এ আসনে জোটের প্রার্থী হচ্ছেন তা প্রায় নিশ্চিত। আওয়ামী লীগের একাংশ দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন চায়। অপর দিকে জাতীয় পার্টি সোমবার দলীয় প্রার্থী হিসেবে এ আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখ্তের নাম ঘোষণা করেছে। মহাজোটের মনোনয়ন না পেলেও দলীয় প্রার্থী হিসেবে লাঙল প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচন করবেন বলে কেন্দ্রীয় নেতাদের বরাতে ঘোষণা দিয়েছেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু। ফলে এ আসনে প্যাচ বেঁধে গেছে। এ আসনে বিএনপিসহ ২৩ দলের প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব।
ইভিএম’র কথা শুনে সাতক্ষীরা সদর আসনে অনেকের মুখ শুকিয়ে গেছে। তার সাথে যোগ হয়েছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেখ আজহার হোসেন। দলীয় প্রতীক লাঙল পেয়েছেন তিনি। মহাজোটের মনোনয়ন না পেলে তিনি দলের হয়ে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন বলে জানিয়েছেন। এ আসনে জামাতের প্রার্থী হচ্ছেন মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক।
সুবিধাজনক স্থানে রয়েছেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. আ. ফ. ম রুহুল হক। মহাজোটে এখন পর্যন্ত তার কোন প্রতিপক্ষ নেই। ফলে লড়াই হবে সরাসরি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামাত ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর সাথে। এ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হচ্ছেন জামাতের রবিউল বাশার। ডা. রুহুল হকের মন্ত্রীত্বকালে ৫বছরে সাতক্ষীরার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বিশেষ করে মেডিকেল কলেজের মত একটি প্রতিষ্ঠান সাতক্ষীরার মানুষ তাকে স্বপ্নপুরুষ হিসেবে হৃদয়ের মাঝে বসিয়েছেন। তাছাড়া দেবহাটা ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ডা. রুহুল হকের নেতৃত্ব নিয়ে দলের মধ্যে তেমন কোন বিরোধ নেই। আশাশুনিতে ছোট খাটো বিরোধ থাকলেও তা স্থানীয়ভাবেই নিরসনযোগ্য বলে অনেকেই মনে করেন। ফলে আসনটি ধরে রাখতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালিগঞ্জের একাংশ) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী এসএম জগলুল হায়দার। তবে এখনো হাল ছাড়েননি বিকল্পধারার এইচ এম গোলাম রেজা। তিনি রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রের সাথে তার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে সোমবার জাতীয়পার্টির দলীয় টিকিট পেয়েছেন আব্দুস সাত্তার মোড়ল। মহাজোটের মনোনয়ন না পেলে তিনি লাঙল নিয়েই লড়বেন বলে জানিয়েছেন দলটির জেলা সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু। এ আসনে বিএনপি-জামাত জোটের প্রার্থী সাবেক এমপি জামাতের গাজী নজরুল ইসলাম। ফলে এ আসনেও নির্বাচনী খেল বেশ জমে উঠেছে।