দণ্ডিত তারেককে ইনডেমনিটি দেবে ঐক্যফ্রন্ট
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে তারেক জিয়াকে ইনডেমনিটি (দায়মোচন) দেয়া হবে। এর ফলে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যে সব দণ্ড রয়েছে, তা আইন করে স্থগিত করা হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচীতে এই প্রস্তাব সংযোজনের সুপারিশ করেছে বিএনপি। যদিও এই প্রস্তাব সমর্থন করেনি ঐক্যফ্রন্টের শরীক অন্যান্য দলগুলো। কিন্তু বিএনপি যেহেতু ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দল, তাই তাদের বক্তব্যই ফ্রন্টে শেষ কথা হিসেবে বিবেচিত হবে বলেই মনে করছে বিএনপি। বিএনপি নেতা এবং প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহাবুব হোসেন বলেছেন, ‘সংসদে আইন পাশ করে এই দন্ড বাতিল করা যায়।’ আদালতের রায় সংসদ বাতিল করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে এডভোকেট মাহাবুব বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনই কিছু বিস্তারিত বলতে চাই না।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে যারা স্বপরিবারে হত্যা করেছিল, খন্দকার মোশতাক এবং জিয়াউর রহমান তাদের বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল। ঐ অধ্যাদেশের বলে আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচারের উর্ধ্বে রাখা হয়েছিল। ২০০১ সালেও বিএনপি জামাত জোট সরকার এসে ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’ নামে এক অভিযান পরিচালনা করে। ঐ অভিযানে যারা বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলো তাদের দায়মুক্তি দেয়া হয়।
তারেক জিয়া একটি মানি লন্ডারিং মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক জিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দন্ডিত করে। আইন অনুযায়ী , ৩০ দিনের মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপীল করার বিধান থাকলেও তারেকের পক্ষ থেকে তা করা হয়নি। কারণ, এ ধরনের আপীল করতে হলে, নিম্ন আদালতে আত্নসমর্পন করতে হয়। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে জয়ী হয় এবং তারেক জিয়া যদি এখন দেশে ফেরেন, তাহলেও তাকে আপীল করার জন্য নিম্ন আদালতে আত্নসমর্পন করে জেলে যেতে হবে। কিন্তু তারেক জিয়া এটি চাননা বরং একটি অধ্যাদেশ বলে এই মামলাগুলোকে বাতিল করতে চান। যদিও যেকোন দন্ড রহিত করার সাংবিধানিক ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির আছে। কিন্তু এরকম দন্ড রহিত করতে গেলে দন্ডিতকে দোষ স্বীকার করতে হবে এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এটা তারেক করবে না। আবার মানি লন্ডারিং মামলায় দন্ড রহিত করতে তাকে আপীল বিভাগে লড়তে হবে। যেটা হবে খুবই অনিশ্চিত। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘তারেক জিয়া কোনো আইনী প্রক্রিয়ায় যেতে আগ্রহী নন, বরং তিনি চান আইন করে তাঁর এবং তাঁর মায়ের বিচার বন্ধ করতে।’ এরকম ইনডেমনিটি দেওয়া যায় কিনা জানতে চাওয়া হলে সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এটা হবে তাহলে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আইনের লংঘন।’ বিএনপি নেতারা এসব সমালোচনার তোয়াক্কা করছে না বরং শুধু তারেক জিয়া নয় ২০০৭ সাল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সব মামলাগুলোই তাঁরা রাজনৈতিক হয়রানি মূলক মনে করছেন এবং জয়ী হলে সব মামলারই দায়মোচনই হবে তাঁদের প্রথম কাজ।