ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিতে উৎসাহিত ব্যবসায়ীরা, তারপরও ৭ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি
কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হয়ে দ্রুত পণ্য ছাড়ের সুযোগ থাকায় ব্যবসায়ীরা ক্রমশ ভোমরা শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানিতে উৎসাহিত হচ্ছেন। ফলে রাজস্ব আদায়ও তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এ বন্দরে। যদিও অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ভোমরা বন্দরে ৭ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি পড়েছে।
সূত্র জানায়, রাজস্ব আদায়ে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রথম চার মাসে ২৮৮ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ২৮১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা।
এর মধ্যে জুলাই মাসে ৬৪ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার বিপরীতে ৪৭ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা, আগস্ট মাসে ৮৪ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকার বিপরীতে ৬০ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৫৮ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার বিপরীতে ৮৮ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা এবং অক্টোবর মাসে ৮০ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৮৫ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। এছাড়া নভেম্বর মাসে ১১১ কোটি ০৫ লক্ষ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত আদায় হয়েছে ৫৬ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা।
অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা কম আদায় হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, গত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের প্রথম চার মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩৮ কোটি ৫ লক্ষ টাকা। যেখানে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ২৮১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
ভোমরা কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩০০- ৩৫০টি আমদানি পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা বন্দরে ঢুকলেও প্রায় ১০০টি বিনা শুল্কের পেয়াজ ও ১০০টি কম শুল্কের পাথরের ট্রাক ঢুকছে। বাকি ১০০-১৫০টি ট্রাকের ফল, মাছ, পান ইত্যাদি থেকেই বেশি রাজস্ব আদায় হচ্ছে। ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ যদি এখনই তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি না করে তাহলে ফলের মৌসুম শেষ হলেই রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়বে।
রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের সহকারি কমিশনার সাগর সেন জানান, ভোমরা শুল্ক স্টেশনে সম্মিলিতভাবে সেবার মান বৃদ্ধি করে দ্রুত পণ্য ছাড়ের বিষয়ে আমরা সর্বদা সচেষ্ট। বর্তমানে ৭৭টি পণ্য প্রবেশের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২২টি পণ্য আমরা ছাড় করতে পারছি। ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে অধিক সংখ্যক পণ্য আমদানি করা গেলে রাজস্ব আদায় বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ভোমরা শুল্ক স্টেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত পণ্য ছাড়ের বিষয়ে বড় ভূমিকা পালনের দায়িত্বে নিয়োজিত আছে। বর্তমানে তাদের উদাসিনতা, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা ব্যবসায়ীদের এই বন্দর ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে পারে।