পঁচা পেঁয়াজের গন্ধে বিপর্যস্ত ভোমরা স্থলবন্দরসহ পাশ্ববর্তী এলাকার পরিবেশ
পঁচা পেয়াজের গন্ধে ভোমরা স্থলবন্দরসহ পাশ্ববর্তী এলাকার পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোমরা ঘোষপাড়া এবং নবাতকাটি এলাকায় পঁচা পেয়াজের দূষিত গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন পথচারি সহ এলাকাবাসি। বিশেষভাবে নারী-শিশু ও অসুস্থ লোকদের অবস্থা বেশি শোচনীয়। প্রায়শঃই চলতি পথে বমি করে ফেলছেন তারা।
সরেজমিন ভোমরা স্থলবন্দর সহ এর আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায় কিছু কিছু গোডাউনের সামনে এবং ঘোষপাড়া ও নবাতকাটির বিস্তির্ণ এলাকায় সারি সারি ফেলেরাখা হয়েছে পঁচা পেঁয়াজের বস্তা। হতদরিদ্র কিছু মানুষ সেই বস্তা থেকে খাওয়ার উপযোগি পেয়াজ খুজতেই ছড়িয়ে ফেলছেন রাশি রাশি পঁচা পেঁয়াজ। পঁচা পেঁয়াজের দূষিত গন্ধে ভোমরা স্থলবন্দর এলাকার পরিবেশ দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার পথচারি প্রতিদিন নাকচাপা দিয়ে পথ চললেও বিষাক্ত বাতাসে অপুরনীয় শারিরীক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তারা। পঁচা পেঁয়াজের বিষক্রিয়ায় নবাতকাটি এলাকায় অসংখ্য গাছ মারা গেছে যা পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম কারন।
গাছ থেকে প্রকৃতিতে নিরন্তর মিশে যাওয়া অক্সিজেন বন্ধ হয়ে তার পরিবর্তে বাতাসে মিশে যাচ্ছে পচা পেয়াজ নিঃসৃত মিথেন সহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি গ্যাস। এলাকাবাসী এই প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভে দুঃখে প্রশ্ন করেছেন যে গাছ কাটার জন্য কেস হলেও গাছ মেরে ফেলার জন্যে কেস হয়না কেন?
এবিষয়ে ভোমরা স্থলবন্দরের বিশিষ্ট আমদানিকারক মেসার্স বি এস ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারি মোঃ আবুল হোসেন বলেন, পেঁয়াজ পঁচনশীল পণ্য হওয়ায় সুদূর নাসিক থেকে ভোমরা বন্দর পর্যন্ত পৌছাতে ২/৫ বস্তা পচে যাওয়াই স্বাভাবিক, এটা মেনেই আমাদের আমদানি করতে হয়। ভোমরা স্থলবন্দরের মত বিশাল ব্যবসাকেন্দ্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখন সময়ের দাবি। বন্দরের প্রতিটি ব্যবসায়ীকে ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড-লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করতে হয় বিধায় ভোমরা স্থলবন্দরের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠনকে সাথে নিয়ে ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদ বন্দরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দ্রুত উদ্যোগ নেবে এমনটাই আমরা আশাকরি।
প্রায় একই সুরে কথা বললেন ভোমরা আড়তদার সমিতির সভাপতি শাহানুর ইসলাম শাহীন এবং ভোমরা কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম। তারা আরো দাবি করেন যে ভোমরা স্থলবন্দরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্থায়ি ব্যবস্থা গ্রহনের পুর্ব পর্যন্ত ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদ ব্যবসায়ীদের বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট স্থানের ব্যবস্থা করুক।
ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী পরিবেশ বিপর্যয়ের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন বর্জ্য ফেলার কোন নির্দিষ্ট স্থানের ব্যবস্থা করতে না পারায় ইছামতি নদীতে বন্দরের বর্জ্য ফেলার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে মৌখিক ভাবে আলোচনা করেছি। দু-একদিনের মধ্যে মাইকিং করে বিষয়টি সকলকে জানানো হবে।