পাটকেলঘাটার খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা

“ঠিলে ধুয়ে দে বউ গাছ কাটতি যাব, খাজুর গাছে চোমর বারোইছে তোরে আয়নে দেব”- গ্রামবাংলার জনপ্রিয় এ আ লিক গানের কথায় পাটকেলঘাটার খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা, ব্যস্ততা এখন বাস্তবে দেখা দিয়েছে। শীতের শুরুতেই অবহেলায় পড়ে থাকা খেজুরগাছের কদর বেড়ে উঠেছে। গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেছেন। শুরু করেছে খেজুর গাছের প্রাথমিক পরিচর্যাও। যাকে বলা হয় ‘গাছ তোলা’। এক সপ্তাহ পরই আবার গাছে ছাঁচ দিয়ে নলি ও গুঁজা লাগানো হবে। খেজুর গাছ থেকে রস বের করতে তিনটি স্তর পেরিয়ে ১৫-২০দিন পরেই রস আহরণ শুরু হয়। পাটকেলঘাটার বিভিন্ন গ্রামে বিশেষত রাস্তার পাশে এখন চোখে পড়ছে খেজুর গাছ তোলা ও চাঁছার দৃশ্য। গাছিরা এখন মাঠে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। আর কিছুদিন পরই মধু বৃক্ষ থেকে সুমধুর রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড়, পাটালি তৈরির উৎসব। সুস্বাদু ও পিঠাপুলির জন্য অতি আবশ্যক উপকরণ হওয়ায় খেজুর রসের চাহিদা রয়েছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এই খেজুরগাছ আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে। যে হারে খেজুরগাছ নিধন হচ্ছে সে তুলনায় রোপণ করা যাচ্ছেনা। অ ল গুলো থেকে গাছ কমে গেছে। খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা, পায়েস, মুড়ি মুড়কী ও নানা রকমের মুখরোচক খাবার তৈরির করার ধুম পড়বে কদিন পরেই। আর রসে ভেজা বিভিন্ন ধরনের পিঠার স্বাদই আলাদা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গাছিরা শীতের শুরুতেই খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে। শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে খেজুরগাছ কাটার প্রতিযোগিতায় গাছিরা। খেজুরের গাছ পরিষ্কার বা তোলার জন্য গাছি দা, পাটের দড়ি তৈরি সহ ভাঁড় মাটির তৈরি ক্রয় ও রস জ্বালানো চুলা ঠিক করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। শীত এলে রসের চাহিদা থাকে তুঙ্গে যার ফলে এর সঙ্গে জড়িতদেরও উপার্জন ভালো। পাটকেলঘাটার গাছি ফজর আলী সরদার জানান, এক ভাঁড় রস জ্বালানোর পর তাতে গুড় হয় প্রায় এক কেজি। যার দাম ১২০ থেকে ১২৪ টাকা। পাটালিও হয় একই পরিমাণ। এলাকার সর্বত্রই রয়েছে খেজুর গাছের আধিক্য। সুস্বাদু ও পিঠাপুলির জন্য অতি আবশ্যক উপকরণ হওয়ায় এখনও খেজুর রসের চাহিদা রয়েছে।
এখন আর আগের মত মাঠ ভরা খেজুর বাগান দেখা যায় না, নেই মাঠে মাঠে রস জ্বালানো বান (চুলো)। যা আছে তা নিতান্তই কম। নলেন গুড়, পাটালি পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা চাচা করার জন্য গাছি দা, দড়ি তৈরি সহ ভাঁড় (মাটির ঠিলা) ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করা সহ বিভিন্ন কাজে রয়েছে ব্যতিব্যস্ত।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)