সৌদি প্রবাসী হলেন নাশকতার মামলায়’ আসামি গ্রেপ্তার
যশোরের চৌগাছা উপজেলায় ‘নাশকতার মামলার’ আসামি হয়েছেন সৌদি আরবে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত আরজান আলী। গতকাল বুধবার বিএনপি-জামায়াতের ৩৯ জন নেতাকর্মীর নামে করা নাশকতা মামলার তিনি ১৫ নম্বর আসামি।
আরজান আলী উপজেলার ধুলিয়ানি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা। দুই বছর ধরে তিনি সৌদি আরবে কর্মরত আছেন বলে জানান তার স্ত্রী শিখা বেগম।
শিখা বেগম বলেন, ‘তার স্বামী বেশ কিছু দিন প্রবাস থেকে ফিরে গত দুই বছর আগে আবারো সৌদি আরবে গেছেন। দুই বছর ধরে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। অথচ তাকে কথিত নাশকতার মামলায় আসামি করা হয়েছে।’
যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে বিএনপি-জামায়াতের ৩৯ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার ‘নাশকতার’ এই মামলাটি করেন। যার নম্বর ৩৬। তাদের মধ্যে ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করে বুধবার সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা গোলাম মোর্শেদ, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হালিম চঞ্চল, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেনসহ ৩৯ জন।
এদের মধ্যে ৯ বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীকে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-চৌগাছা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান। একই গ্রামের বিএনপি নেতা মহাসিন আলী, আন্দুলিয়া গ্রামের জামায়াত নেতা মজিবর রহমানের ছেলে মাওলানা রইচ উদ্দিন।
এছাড়া একই গ্রামের জামায়াত নেতা ইব্রাহিম খলিল ও কিনু মিয়ার ছেলে সিরাজুল ইসলাম। আন্দুলিয়া গ্রামের ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সহিদুল ইসলাম, সুখপুকুরিয়া গ্রামের জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলী, চৌগাছা পৌরসভার কারিগরপাড়া গ্রামের বিএনপি কর্মী আমির হোসেন বাবু এবং কাবিলপুর গ্রামের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা উল্লেখিত ৩৯ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২০ জনকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে চৌগাছা-যশোর মহাসড়কের চৌগাছা সরকারি কলেজের সামনে সড়কের ওপর সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অর্ন্তঘাতমূলক হামলার উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়।
সংবাদ পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালালে অন্যান্য আসামিরা পালিয়ে গেলেও ৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় আসামি মিজানুর রহমান ও ইব্রাহিম খলিলের হাতে থাকা প্লাস্টিকের বাজার করার ব্যাগে থেকে আটটি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়।
প্রবাসী আরজান আলীকে মামলার আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ হোসেন জানান, আরজান সৌদিতে অব্স্থান করছেন, এমন তথ্য-প্রমাণ যদি কেউ দিতে পারে, তাহলে আরজানকে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজিব মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলা যেহেতু ডিবি করেছে, এ বিষয়ে তারাই ভাল বলতে পারবে।’