১৯ বছর পর দুই ভাই একমঞ্চে!
দু’জন সহোদর হলেও রাজনীতির মাঠে পথ চলা দুজনের দুই দিকে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ। যিনি নিজেই এখন একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা। আরেকজন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা।
এদের একজন নিজে আলাদা দল গঠন করে রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। অন্যজন বলা চলে নিষ্ক্রিয়। তারা আপন দুই ভাই— আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী।
আর লতিফ সিদ্দিকী ছিলেন সর্বশেষ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। তবে ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে এক মতবিনিময় সভায় হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে রাজনীতির ময়দান থেকে ছিটকে পড়েন লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার, মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ এমনকি দলীয় সাধারণ সদস্য পদটিও তাকে হারাতে হয়েছে।
এরপর বলতে গেলে রাজনীতি থেকে অনেকটা নির্বাসনেই তিনি। যদিও বহিষ্কারের পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে লতিফ সিদ্দিকীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। অন্যদিকে কাদের সিদ্দিকী তার রাজনৈতিক দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নিয়ে রাজনীতির মাঠে বেশ সক্রিয় রয়েছেন।
কিন্তু এবার দুই ভাইকে দেখা গেল একমঞ্চে। রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে ‘৭৫-এর প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মিলনমেলায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন লতিফ সিদ্দিকী। সেখানে সভাপতিত্ব করছিলেন কাদের সিদ্দিকী।
সভাপতির বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজ প্রায় ১৯ বছর আমরা দুই ভাই পাশাপাশি কোনো জনসভায় বসিনি। খুব সম্ভবত এক জানাজায় আমরা একত্রিত হয়েছিলাম।
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি কারো পাশে দাঁড়াই না। ন্যায় ও সত্যের পক্ষে দাঁড়াই। এজন্যই পত্রিকায় দেখে আমন্ত্রিত না হয়েও চলে এসেছি। তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক নেতৃত্ব কাদের সিদ্দিকীকে স্বীকার করি না, তবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও ১৫ আগস্ট পরবর্তী প্রতিরোধ যুদ্ধকে স্বীকার করি। তার নেতৃত্বেই সেদিন প্রতিরোধ যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলাম। তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য দিলে তার মর্মকথা বোঝার সামর্থ্য অনেকের নেই। বক্তব্য বোঝার প্রজ্ঞা এ দেশের রাজনীতিবিদদের নেই।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাবুল সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা বীরপ্রতীক, অর্থ সম্পাদক আবদুল্লাহ বীরপ্রতীক, কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মিণী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান কায়সার চৌধুরী।