মানসিক চাপ থেকে বাঁচতে…
দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ বাড়তেই পারে। পারিবারিক অশান্তি, ব্যাক্তিগত জীবন, অফিসের ঝামেলা সব কিছু মিলিয়ে চাপমুক্ত থাকা ভীষণ কঠিন। সারাদিনের নানা সমস্যায় ও কর্মব্যস্ততায় মানসিক চাপের শিকার হতে হয় প্রায় প্রত্যেককেই। তবে সহজ কিছু উপায় জানা থাকলে এই চাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জেনে নিন কিভাবে মানসিক চাপ দূর করবেন-
গান:
মানসিক চাপ থেকে বাঁচতে হলে শুনতে পারেন হালকা মিউজিকের কিছু গান। তবে গানটি ভালো লাগার মতো হতে হবে। অফিসে থাকলেও হেডফোনে গান শুনতে পারেন। দুপুরের খাবারের বিরতির সময়ও গান শুনতে পারেন। তারপর আবার কাজ করতে থাকুন। গান মস্তিষ্কের আড়াল থেকে কাজের গতি ও নিপুণতা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
চুইংগাম: তামাক ছাড়তে অনেকে চুইংগাম খেয়ে থাকেন। চুইংগামের নানা উপাদান স্নায়ুগুলোকে উদ্দীপ্ত করতে সাহায্য করে। ফলে ক্লান্তি দূর হয়। কাজের গতি ফিরে পাওয়া যায়। ক্লান্তি কমে গেলে মানুষিক চাপ থেকেও কিছুটা হলেও মুক্তি মেলে।
বডি ম্যাসাজ:
শরীরের নানা রকমের ব্যথা কমাতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি নানা রকমের মানসিক চাপ কমিয়ে প্রফুল্ল রাখতেও এর কোনো জুড়ি নেই। এটি স্নায়ুগুলোকে উদ্দীপ্ত করে রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহায্য করে এই ধরণের ম্যাসাজ। সপ্তাহে এক বার বডি ম্যাসাজ করালে শরীর ও মন দুটোই ফুরফুরে মেজাজের থাকবে।
ছবি আঁকা: আঁকার শখ থাকলে সঙ্গে কাগজ রাখতে পারেন। কাজের ফাঁকে সামান্য সময় পেলেই আঁকা আঁকি করবেন। তাতে মনের চাপ কমবে। এতে পুরোনো শখও ঝালাই হবে। মনোবিজ্ঞানের মতে, কম্পিউটারের যুগে কাগজ কলমে সান্নিধ্য এমনিতেই মন মেজাজ ভালো রাখে। তাই মানসিক চাপ কমাতে মন বসাতে পারেন আঁকাতে।
হাঁটা হাঁটি:
কাজে মন না বসলে অনেকেই ধুমপানের আশ্রয় নিয়ে থাকেন। যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই সেসব ছেড়ে বরং হাঁটায় মন দিতে পারেন। কোনো এক সময়ে অফিস থেকে বেরিয়ে চারপাশে হেঁটে আসতে পারেন। ১৫ মিনিটের মতো হাঁটলেও শরীরের পেশীগুলো সক্রিয় হয়। তখন এক জায়গায় বসে কাজ করার ক্লান্তি কমবে।
মেডিটেশন:
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠার আগে বা ঘুমতে যাওয়ার সময় মেডিটেশন করতে পারেন। মেডিটেশন মন সংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। এতে সহজেই কাজের চাপ কমে যায়। এটা আমাদের সবার জানা থাকলেও করা হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, রোজ মেডিটেশন করলে মন শান্ত থাকে, সহজে উত্তেজিত হওয়ার প্রবনতাও কমে যায়। যেটা অফিস বা কাজের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী।
ঘুম: শরীর সতেজ রাখতে ঘুম খুবই প্রয়োজনীয়। তাই ঘুম থেকে উঠা ও ঘুমাতে যাওয়ার একটি রুটিন বানাতে হবে। এভাবে রুটিন করে নিয়মিত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমালে মানসিক চাপ অনেক কমে যাবে।
খাওয়া দাওয়া:
অনেক সময় মানসিক চাপের কারণে খাওয়ায় অনীহা দেখা দেয়। তাই মনে রাখতে হবে, না খেয়ে থাকলে সমস্যা বা মানসিক চাপ কমে যাবে না। বরং খেয়ে শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে হবে। যা সমস্যা দূর করতে নানা পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে। এ সময় ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে আর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সকালে ভারী কোনো নাস্তা করতে হবে। গম, রুটি ও পাস্তা জাতীয় খাবার খেতে পারেন। এর সঙ্গে ভিটামিন এ, ম্যাগনেসিয়াম, গ্রিন টি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন।
ডায়েরি:
যখন মানসিক চাপে ভুগবেন তখন ডায়েরি লিখতে পারেন। যে কারণে কষ্ট হচ্ছে, মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তা লিখে রাখতে পারেন। সেইসঙ্গে কি চান? বা কি করলে ভাল লাগবে সেগুলোও লিখে রাখতে পারেন। ডায়েরি লেখার এই অভ্যাসটি মানসিক চাপ কমাতে অনেক সাহায্য করে।