বাংলাদেশ ষড়যন্ত্রের উর্বরভূমি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ষড়যন্ত্রের উর্বরভূমি। তিনি বলেন, টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থেকে এমন কি অন্যায় করেছি যে, আমাকে উৎখ্যাত করতে হবে? এক শ্রেণির লোক আছে- যারা দেশের ও মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন সহ্য করতে পারে না। তাই ক’দিন পর পর তারা সরকার উৎখাতের দাবি তোলে।
শেখ হাসিনা বলেন, নিজেদের স্বার্থে রাজনীতি করি না, শুধু দেশের মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি। নির্বাচনে যাদের ক্ষমতায় আসার সামর্থ্য নেই, তারাই ষড়যন্ত্র করছে, ষড়যন্ত্র আছে, থাকবে; সেটা নিয়ে পরোয়া করি না।
জাতিসংঘ সফর নিয়ে বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শুরুতে শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান, বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক ও মতবিনিময়ের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আন্দোলনের ফসলই হচ্ছে নিরপেক্ষ কাঠামোয় নির্বাচন কমিশন গঠন, স্বচ্ছ ব্যালট বক্স ও ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রনয়ন।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরাতে কাজ করছে সরকার। বিশ্বের নেতারা বর্তমান সরকারকে ফের ক্ষমতায় দেখতে চান। ভালো কাজ করেছি, ব্যাপক উন্নয়ন করেছি- এই আত্মতুষ্টিতে ক্ষমতায় আসা যায় না। বাংলাদেশ তো তেমন নয়। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার কথা বলেছি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেসব সাংবাদিক মনে করেন তারা কোনো মিথ্যা তথ্য দেবেন না, তাদের উদ্বগ্নি হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারো বিরুদ্ধে কোনো তথ্য কিংবা সংবাদ প্রকাশ করলে, তা প্রমাণ করতে হবে। প্রমাণ করতে না পারলে সেই সাংবাদিক কিংবা সংশ্লিষ্টদের শাস্তি পেতে হবে। অপরাধী মন না থাকলে উদ্বেগের কারণ নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাইবার সিকিউরিটি প্রত্যেক দেশে বিরাট সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। সেখানে সামাজিক, পারিবারিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, পর্ণোগ্রাফি ছাড়ানো হচ্ছে। আমরা সেসব অপরাধ রোধ উদ্যোগ নিয়েছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষোদ্গার ও ‘নোংরামি’র বিরুদ্ধে লড়তেও কাজে লাগবে।
বিদেশি শক্তির সমর্থন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ মুখাপেক্ষী হয়ে রাজনীতি করে না। দেশের জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি পরিচালিত হয়। তাই কারো সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নিজের পদের সম্মান ধরে রাখতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এস কে সিনহার দুর্নীতির বিচার আইনের নিজস্ব গতিতে চলবে।
নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। সংসদে থাকা দল, রাষ্ট্রপতি ও কেবিনেটের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার করেই নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা ঠিক করা হবে।