সাতক্ষীরায় গভীর রাতে সাংবাদিকের বাড়ির সামনে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, থানায় জিডি
সাতক্ষীরা শহরে গভীর রাতে দুই সাংবাদিকের বাড়ির সামনে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মহড়ায় উদ্বিগ্ন সাতক্ষীরা শহরের সচেতন মহল সাংবাদিক মহলে। এ ঘটনায় রবিবার সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক হাফিজুর রহমান মাসুম।
গত শুক্রবার বাংলাদেশে-ভারত এশিয়া কাপ ফাইনালের শেষে রাত প্রায় আড়াইটার দিকে শহরের পলাশপোল তেঁতুলতলা এলাকায় সাবেক এমপি মরহুম এড. এ.এফ.এম এন্তাজ আলীর পুত্র দৈনিক কালের চিত্রের মফঃস্বল বার্তা সম্পাদক মেহেদী আলী সুজয় ও অনলাইন নিউজপোর্টাল ডেইলি সাতক্ষীরার সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুমের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার ভুক্তভোগী সাংবাদিক মেহেদী আলী সুজয় জানান, তিনি প্রতিদিনের ন্যায় পত্রিকা অফিসের কাজ শেষে রাত আড়াইটার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়িতে প্রবেশের সময় তিনি দেখতে পান তার বাড়ির পাশে খালি গায়ে কেউ বসে আছেন। তখন তিনি ’কে ওখানে’ বললে সেই ব্যক্তি উঠে দাঁড়ায়। তখন সাংবাদিক সুজয় ’চোর চোর’ বলে দুইবার চিৎকার দিলে ওই সন্ত্রাসী তার গলায় দা ধরে গালি দিয়ে বলে, “চিৎকার করলে লাশ ফেলে দেবো।” এ সময় আশে পাশে লুকিয়ে থাকা আরো ১০/১১ জন সন্ত্রাসী বের হয়ে তাকে ঘিরে ফেললে সুজয় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে তাদের কাছে চিৎকার করার জন্য ক্ষমা চান এবং তার কোন ক্ষতি না করার জন্য মিনতি করেন। এ সময় গলা দা ধরা ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করে, “এটা কি তোর বাড়ি?” তিনি হ্যাঁ সূচক জবাব দিলে ওই ব্যক্তি তাকে বলেন, “সোজা কোন কথা না বলে বাড়ির ফিতরে চলে যা। কোন শব্দ করবি না।” সুজয় মটরসাইকেল ঠেলে বাড়ির দিকে প্রবেশের করতে থাকলে তারা আর কোন কথা না বলে দল বেঁধে হাঁটতে হাঁটতে পলাশপোল বউ বাজারের দিকে চলে যায়। এ সময় সুজয় নিজেকে সামলিয়ে চিৎকার করে এবং পুলিশকে খবর দেয়। এ সময় স্থানীয়রা ছুটে আসে এবং কিছুক্ষণ পর সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক সেখানে হাজির হন। কিন্তু ততক্ষণে তাদের কেউ দেখতে পাইনি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি সেলাই রেন্স উদ্ধার করে। এসময় হাফিজুর রহমান মাসুম বাড়ির বাইরে ছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকা অবস্থাতেই তিনি বাড়িতে ফেরেন এবং ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন।
সাংবাদিক সুজয় জানান, “সশস্ত্র ব্যক্তিদের প্রত্যেকেই খালি গায়ে ছিল এবং তাদের মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা ছিলো। তারা প্রত্যেকে ফুটবল খেলার হাফ প্যান্টের উপরে লুঙ্গি মালকোচা মারা অবস্থায় ছিল। প্রায় প্রত্যেকের হাতে ধারালো দা থাকলেও একজনের হাতে একটি কুড়াল ছিল।”
এদিকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের রহস্যজনক আচরণ ও তাদের ওৎ পেতে থাকার ঘটনা জানাজানি হওয়ায় সকলের মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনা বাসা বেধেছে। সবার প্রশ্ন- তারা আসালে কারা ছিলেন? সাংবাদিক সুজয় তাদের সামনে হঠাৎ উপস্থিত হওয়ায় তাকে ভীতি প্রদর্শন করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কোথায় চলে গেলো? তারা কি আসলে অন্য কারও জন্য অপেক্ষা করছিল?
নাকি তারা আসলে ডাকাত ছিলো। নানা প্রশ্নে জর্জরিত করেছে সাতক্ষীরার সচেতন মহল ও সাংবাদিক সমাজকে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “সেদিক রাতের ঘটনা আমরা তৎক্ষণাৎ অবগত হয়েছি এবং এবিষয়ে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। সন্ত্রাসী যে বা যারাই হোক তাদেরকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।”