শোল মাছ চাষ করে ভাগ্য ঘুরানোর চেষ্টা
নদী-খাল-বিলে শোল মাছ পোনা চরাতে দেখেনি গ্রামে এমন মানুষ খুব কমই আছে। কিন্তু বর্তমানে জলাশয় না থাকায় এখন আর সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না। তাইতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে শোল মাছের চাষ। কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই প্রাকৃতিক নিয়মে শোল মাছের পোনা উৎপাদন করে সাড়া ফেলেছেন কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের শ্রীধরকাটি গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৪৩)।
শনিবার সরেজমিনে ফিরোজা বেগমের শোল মাছের খামারে গিয়ে দেখা যায়, তার ছোট্ট খামারে এলাকার মৎস্য চাষীরা এসে পরামর্শ গ্রহণ করছে। বর্তমানে তিনি ওই এলাকায় শোল মাছ চাষে মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই শোল মাছ চাষ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
ফিরোজা বেগম দৈনিক সাতক্ষীরাকে জানান, গত কয়েক মাস আগে তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারেন পুরাতন সাতক্ষীরার সরদার বাড়ির ছেলে জাকির হোসেন শোল মাছ চাষ করে সফল হয়েছেন। তখন তিনি তার স্বামীর সাথে পরামর্শ করে সাতক্ষীরা থেকে ১৭’শ টাকা দিয়ে দুইটি শোল মাছ ক্রয় করেন। মাছ দুটি যন্ত করে বাড়িতে এনে নিজ ভিটায় ৫ কাঠা জমির পুকুরে ছেড়ে দেন।
মাছ ছাড়ার ১৫ দিনের মধ্যে মাছ দুটি রেণু ছাড়ে। রেণু ছাড়ার পর ফিরোজা বেগম এবং তার স্বামী জাকির হোসেনের পরামর্শে প্রতিদিন সকালে যেখানে রেণু চরে বেডায় সেখানে অর্ধেক ডিম আর অর্ধেক একইভাবে বিকেলে মাছের খাদ্য হিসেবে দিতে থাকেন। এভাবে চলতে থাকে ২ সপ্তাহ।
এরপর দুটি তেলাপিয়া মাছ সিদ্ধ করে আর কাঁচা ডিম একসাথে মিক্সার করে মাছের রেণুর খাদ্য হিসেবে দিতে থাকেন আরও প্রায় দেড়মাস। এরপর থেকে প্রতিদিন আনুমানিক পাঁচশ গ্রাম মাছ সিদ্ধ করে শোল মাছের খাদ্য হিসেবে ওই পুকুরে দিতে থাকেন। বর্তমানে তার শোল মাছের বয়স তিন মাসেরও বেশি। প্রতিটি শোল মাছের আকার হয়েছে প্রায় ৪ ইঞ্চি।
ফিরোজা বেগম আশা করছেন, এই অবস্থা বজায় থাকলে মাছ বিক্রি করে সমস্ত খরচ বাদ দিয়েও তার ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকারও বেশি লাভ হবে।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে অনেকে শোল মাছের চাষ শুরু করেছেন। বাজারে এই মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে কালিগঞ্জে এটির প্রথম চাষ করেছেন ফিরোজা বেগম। আমাদের অফিসের পক্ষ থেকে তাকে আমরা উৎসাহিত করছি। যদি আর কেউ শোল মাছের চাষ করতে চায় তবে অবশ্যই আমরা তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করব।