যৌতুকের টাকা দিয়েও রক্ষা পেল না গৃহবধূ পারুল
যশোরের কেশবপুরে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীর সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়েও রক্ষা পাইনি গৃহবধূ পারুল। মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ পারুল বেগম এখন কেশবপুর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার বাউশলা গ্রামের মোস্তাফা সরদারের কন্যা পারুল খাতুনের সাথে একই উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামের আব্দুল জলিল খাঁর ছেলে আলামিন খাঁর সাথে ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ ১ লাখ ১ টাকা দেনমোহরে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের সময় মোস্তফা সরদার তার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে নগদ নগদ ৫০ হাজার টাকা, ১টি বাই সাইকেল, টার্চ মোবাইল-সহ ২ লাখ টাকার মালামাল প্রদান করে। বিবাহের পর থেকে আলামিন ও তার পিতা-মাতা জমি কেনার কথা বলে গৃহবধূ পারুল বেগম ও তার পিতা-মাতার নিকট নিকট ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবীতে বিভিন্ন সময় মারপিট করে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তার দরিদ্র পিতা মোস্তাফা সরদার ৭-০৪-২০১৫ তারিখে ৫০ হাজার, ২৯-০৫-২০১৫ তারিখে ৩০ হাজার টাকা, ১৩-০৬-২০১৮ তারিখে ২০ হাজার টাকা, ১২-০১-২০১৬ তারিখে ৩০ হাজার টাকা ও সর্বশেষ ১৪-০৬-২০১৭ তারিখে ১৫ হাজার টাকা সর্বমোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে। তাদের ঘরে লামিয়া নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বর্তমানে মোস্তাফা সরদারের আর্থিক সমর্থ না থাকায় যৌতুকের বাকি ৫০ হাজার টাকা দিতে অপরাকতা জানায়। এত ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী আলামিন খাঁ, শ্বশুর আব্দুল জলিল খাঁ, শাশুড়ি লাইলি বেগম-সহ পরিবার লোকজন মিলে গতকাল সকালে গৃহবধূ পারুল বেগম (২১) কে হাত-পা বেধে হাতুড়ি, লোহার রড ও কাঁচের বোতল দিয়ে মধ্যযুগীয় উপায়ে বেদম মারপিট-সহ নির্যাতন করে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান থেতলে যায়। সে তাৎক্ষনিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। খবর পেয়ে পারুল বেগরের পিতা-মাতা ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। বর্তমানে গৃহবধূ পারুল বেগম হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেশবপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।