জাতিসংঘে যে বার্তা দিয়ে এলেন ফখরুল
দেশে ফিরেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে রোববার সন্ধ্যায় তার দেশে ফেরার খবর নিশ্চিত করেছেন চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শাইরুল কবির খান। সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তোলা এই সফরের বিষয়ে অচিরেই মির্জা ফখরুল সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান শাইরুল কবির। এর আগে গত শনিবার ফরিদপুরে এক অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তাদের ঢাকাস্থ অফিসের মাধ্যমে দাওয়াত পাঠিয়েছেন। আর এ দাওয়াত পেয়েই আমাদের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতিসংঘে গিয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৪০ মিনিটে অনেকটাই নীরবে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। ফিরবেন আগামী দুই-একদিনের মধ্যেই। জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় মির্জা ফখরুলের সঙ্গে আরো ছিলেন বিএনপির দুই নেতা তাবিথ আউয়াল ও লন্ডন প্রবাসী হুমায়ুন কবির। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে চারটি বিষয়ে জানানো হয়। প্রথমত, রোহিঙ্গা ইস্যু। এই ইস্যুতে মির্জা ফখরুল অতীতে দুবার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের কথা তুলে ধরেন। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে এবং ৯২ সালে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিএনপি সরকারের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন বিএনপির মহাসচিব। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সমস্যাটি যে এখন আর দ্বিপাক্ষিক নয়, সে বিষয়টি জাতিসংঘকে উপলব্ধি করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তিনি। গত ৩০ জুন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ঢাকায় এলেও বিএনপি তার সাক্ষাৎ পায়নি। এ কারণে বিএনপির পক্ষ থেকে জাতিসংঘে চিঠি দেওয়া হয়। পরে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে মির্জা ফখরুলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সূত্র জানায়, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আরো বড় আকার ধারণ করবে। আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারেও এর একটি পরিষ্কার অবস্থান থাকবে। এই ইস্যুটি জাতিসংঘের কাছেও নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। মির্জা ফখরুল জাতিসংঘে খালেদা জিয়ার মামলা ও তার কারাবরণ নিয়ে বিস্তারিত ফাইল জমা দেন। এতে বিএনপির চেয়ারপারসনের মামলার আইনি দিক, তার বয়স ও ব্যক্তিত্ব বিবেচনায় তার জামিন না হওয়াসহ শারীরিক অবস্থার বিষয়েও জাতিসংঘকে জানানো হয়। গত কয়েকবছর ধরেই বিদেশি রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোকে বিভিন্ন বিষয়ে জানাচ্ছে বিএনপি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন দলটির নেতারা। এর সূত্র ধরেই জাতিসংঘে যান মির্জা ফখরুল। এবার যাওয়ার চারটি কারণগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়। প্রথমটি হচ্ছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও আগামী একাদশ নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি। দলীয় দায়িত্বশীলদের প্রস্তুতকৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়েছেন তিনি। এদিকে রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানায়, বিএনপি মহাসচিবের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে উৎকণ্ঠিত হয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমালোচনা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন।
Please follow and like us: