ডাকাত জলিলের লাশ গ্রহণে অনিহা পরিবার ও এলাকাবাসীর
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য তাকে কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে পুলিশের কাছ থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেয়। মুহুর্তেই কয়েক হাজার মানুষ তাকে গনপিটুনি দিয়ে হত্যা করে।
এদিকে, এই হত্যাকান্ডের পর পুলিশ শনিবার রাতে নিহত আব্দুল জলিলের লাশ উদ্ধার করে কালিগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। রোববার দুপুরে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হত্যার প্রধান আসামি কৃষ্ণনগর ইউপি সদস্য,ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবদুল জলিলকে শুক্রবার গাজিপুরের কালিয়াকৈর থেকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার তাকে নিয়ে আসা হয় সাতক্ষীরায়। তিনি জানান শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জলিলকে নিয়ে ঘটনাস্থল অস্ত্র উদ্ধারের জন্য কৃষ্ণনগরে যাওয়া মাত্র হাজার হাজার লোক এসে তাকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। তিনি জানান পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। ওসি আরও জানান চেয়ারম্যানকে যেখানে হত্যা করা হয়েছিল সেখানেই তাকে জনতা গনপিটুনি দিয়ে হত্যা করে।
ওসি হাসান হাফিজুর রহমান আরো জানায়, শনিবার রাত ১১ টার দিকে নিহত আব্দুল জলিল মেম্বরের লাশ উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়। রোববার সকালে তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। রোববার বিকেলে ময়না তদন্ত শেষে লাশ আনা হয় কালিগঞ্জে। কিন্তু নিহত আব্দুল জলিলের পরিবারে কোন সদস্য বা অন্য কোন আত্মীয়স্বজন আব্দুল জলিলের লাশ গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। পরে কালিগঞ্জ সরকারি কবর স্থানে রোববার রাতে দাফন করা হবে। তিনি বলেন, কবর খুঁড়ার কাজ চলছে। তবে আব্দুল জলিলের জানাজার নামাজ কেউ পড়তে রাজি হচ্ছে না। জানাজার নামাজ পড়ানোর মতো কোন মাওলানাকেও এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ওসি জানান, পুলিশের কাছ থেকে লাশ ছিনিয়ে নিয়ে গণটিপুনি দিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কালিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব হাসান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। এই মামলায় ৫ থেকে ৭ হাজার অজ্ঞাতনামা মানুষকে আসামী করা হয়েছে। এজহার নামীয় কোন আসামী নেই এই মামলায়। তিনি বলেন, আব্দুল জলিল এলাকার মানুষকে খুবই অত্যাচার, নির্যাতন করেছে। এজন্য তার ওপর সবার ঘৃনা। কৃষ্ণনগর এলাকার মানুষ ঘোষনা দিয়েছে আব্দুল জলিলের লাশ ওই এলাকায় ঢুকতে দেবে না। বিধায় লাশ সরকারি কবরস্থানে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, যে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে কৃষ্ণনগর বাজারে যুবলীগ অফিসে বসে থাকাকালে চেয়ারম্যান কেএম মোশাররফ হোসেনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় একই ইউপির সদস্য ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আদুল জলিল গাইন ওরফে ডাকাত জলিল ওরফে খুনে জলিলকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন নিহতের মেয়ে সাথিয়া পারভিন।