আবারো চলন্ত বাসে ধর্ষণ!

 টাঙ্গাইলের চাঞ্চল্যকর রুপা গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু সেতু থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় হেলপার নাজমুল (২২) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুপারভাইজার বিষু ও ড্রাইভার আলম পালিয়ে যায়।

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি বাস যাত্রী নিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পুর্বপার বাস স্ট্যান্ডে যাচ্ছিল। রাতে যাত্রী কম থাকায় পথিমধ্যে এক কিশোরী যাত্রী ছাড়া সকল যাত্রী তাদের গন্তব্যস্থলে নেমে যায়। এ সুযোগে কিশোরী একা থাকায় ড্রাইভার, সুপারভাইজার ও হেলপার মিলে তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটির চিৎকারে মহাসড়কে টহলরত পুলিশ শব্দ শুনতে পেয়ে বাসটিকে ফলো করে বঙ্গবন্ধু সেতু পুর্বপার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে হাতে নাতে হেলপারকে ধরতে সক্ষম হয়। বাকি দুই জন পালিয়ে যায়।

পরে কিশোরীটিকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে রাখে। মেয়েটি তার কোন নাম ঠিকানা না বলতে পারায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। যে কারণে তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার (৩১ আগস্ট) সকালে গ্রেফতারকৃত হেলপারকে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রতিবন্ধী কিশোরী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপাকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে পরিবহণ শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রুপার লাশ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় মহিলা হিসেবে তার লাশ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রুপার লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেন।

২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহণের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

গত ১৫ অক্টোবর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে ৫ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্র দাখিলের পর দিন ১৬ অক্টোবর মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর আদালত এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। এ মামলায় বাদীসহ ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণে মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)