সৌন্দর্য্য ফেরাতে ডিমের জাদু
আপনি নিশ্চয়ই রুপচর্চার প্রয়োজনে পার্লারে গিয়ে টাকা খরচ করেন। জ্বি আপনাকেই বলছি! পার্লারে গিয়ে সময় ও টাকা খরচ না করে বরং ঘরে বসেই ডিম দিয়ে সেরে ফেলুন আপনার রুপচর্চা।
আপনার ত্বক ও চুলের যত্নে ডিম খুবই কার্য্যকরি ভূমিকা পালন করবে। ডিম নিশ্চয়ই আপনার ঘরে সবসময় থাকে। তাই ডিম দিয়ে আপনি সহজেই ত্বক ও চুলের যত্ন নিতে পারেন।
ডিমে ১৩টি প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল এবং উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক রপচর্চায় ডিমের ১০টি ব্যবহার-
(১) চুলের যত্নে ডিম:
আপনার চুলকে মসৃণ ও জলমলে করতে ২টি ডিমের সঙ্গে ২টেবিল চামচ অ্যালোভেরা একটি বাটিতে নিয়ে ভালো করে মিক্সড করে নিন। এবার আপনার পুরো চুলসহ চুলের গোড়ায় গোড়ায় এটি লাগিয়ে মিনিট পাঁচেক ম্যাসেজ করুন। এরপর অপেক্ষার পালা। টানা ৩০-৪০মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এবার দেখুন চমৎকার!
(২) রুক্ষ চুলে ডিম:
একটি ডিম, একটি কলা, ২ টেবিল চামচ দুধ এবং ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করুন। এবার এই মিশ্রণে ১ টেবিল চামচ মধু যোগ করুন। আপনার চুলের গোড়ায় ও পুরো চুলে মাস্কটি ব্যবহার করুন। এক ঘন্টার পরে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুল পড়া রোধ করা সহ এই মাস্কটি আপনার ড্যামেজ হেয়ারকে পুনরায় প্রাণবন্ত করে তুলবে। ভালো ফল পেতে প্রতি সপ্তাহে দুইবার এই মাস্ক চুলে ব্যবহার করুন।
(৩) শুষ্ক ত্বকের জন্য ডিম:
এবার জেনে নিন, ত্বকের যত্নে কিভাবে ডিম ব্যবহার করবেন? ১ চা চামচ মধুর সঙ্গে একটি ডিম মিশিয়ে নিন ভালোভাবে। এবার প্যাকটি আপনার মুখে প্রয়োগ করুন এবং ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। সপ্তাহে অন্তত দুই বার এটি ব্যবহার করুন।
(৪) ত্বকের বলিরেখা দূর করতে ডিম:
আপনার মুখটি ভালো করে ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। এবার ডিমের সাদা অংশ পুরো মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুঁয়ে ফেলুন।
(৫) চোখের নিচের ফোলা ভাব দূর করবে ডিম:
আপনার আঙুলের সাহায্যে চোখের নীচে ডিমের সাদা অংশ ব্যাবহার করুন। এবং ১০ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ধুঁয়ে ফেলুন।
(৬) অবাঞ্ছিত লোম দূর করবে ডিম:
একটি ডিমের সাদা অংশ, ১ চা চামচ চিনি এবং হাফ টেবিল চামচ ময়দা দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আপনার মুখের যে অংশগুলোতে অবাঞ্ছিত লোম রয়েছে অর্থ্যাৎ আপারলিপে ও গালে ডিমের মিশ্রণটি লাগিয়ে ফেলুন। এটি শুকিয়ে গেলে লোমের গোড়ার উল্টো দিক থেকে মাস্কটি উঠানো শুরু করেন। খেয়াল করে দেখুন মাস্কের সঙ্গে সঙ্গে আপনার মুখের অবাঞ্ছিত লোমগুলোও উঠছে। এরপর মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্ত একবার এটি ব্যবহার করুন।
(৭) খুশকিমুক্ত চুল পেতে ডিম:
২টি ডিমের সাদা অংশ, ২ টেবিল অলিভ অয়েল, ১ কাপ টক দই এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিক্স করুন যতক্ষণ না এটি মসৃণ হয়। এবার প্যাকটি আপনার পুরো চুলে প্রয়োগ করুন। ৫-১০ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিন। প্রতি সপ্তাহ ২ বার এটি আপনার চুলে ব্যবহার করুন। দেখবেন খুশকি উধাও।
(৮) ত্বকের উজ্জলতায় ডিম: ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ ময়দা মেশান। এবার এই মিশ্রণে কয়েক ফোটা লেবুর রসযোগ করুন। এবার মুখে প্যাকটি মাখুন। ২০ মিনিট অপেক্ষা করে মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন এটি ব্যবহার করুন। এবার লক্ষ্য করুন ত্বকের জেল্লা।
(৯) ব্রণের সমস্যা সমাধানে ডিম:
২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা এবং লেবুর রস, ১/৪ কাপ দই এবং ৩টি ডিম একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করুন। ব্রণের ওপর প্রয়োগ করুন। এবার ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন এটি।
(১০) চুল কন্ডিশনিং করবে ডিম:
একটি বাটিতে ২টি ডিমের সঙ্গে ৪ টেবিল চামচ মেয়োনিজ যোগ করুন। একটি চামচ দিয়ে সবগুলো উপাদান নাড়ুন যতক্ষণ না পর্যন্ত একটি ঘন হয়ে পেস্ট হবে। এবার ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল যোগ করুন। চুলের মাঝ বরাবর থেকে আগা পর্যন্ত এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। ২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলূন।