তালায় কপোতাক্ষ দখল করে মৎস্য চাষ : না দেথার ভান করছে প্রশাসন
সাতক্ষীরার তালা বলরামপুর সানি ইটভাটার মালিক আঃ খালেক এর বিরুদ্ধে সরকারি খাস জায়গা ও কপোতাক্ষের ভেড়িবাঁধ কেটে পুকুর খনন করে মৎস্য চাষ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বলরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বেলতলা ঘাট নামক এলাকায়। বর্তমান সরকার ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে কপোতাক্ষ খনন করে এলাকার মানুষকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করে। কিন্তু সরকারের এই সু-পরিকল্পনা আজ ভেস্তে যেতে বসেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি উঠায় এলাকাবাসী আতংকিত। এব্যাপারে এলাকাবাসী প্রশাসনের নিকট আবেদন নিবেদন করলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি প্রশাসন।
সরেজমিন ঘুরে কথা হয়, আমজাদ হোসেন(৬৫), আনার গাজী(৬২),সোহরাব মোড়ল(৩২), ইউসুফ গাজী(৫০), শাহিনুর রহমান(৩৫), ডাঃ উদয় মণ্ডল(৪৫)সহ অনেকের সাথে। তারা জানায়, একসময় কপোতাক্ষ নদ ব্যাপক ভাবে বিতৃস্ত ছিলো। এই জায়গাটি বেলতলার ঘাট নামে পরিচিত। এই ঘাট দিয়ে বিভিন্ন এলাকার মানুষ পারাপার হতো। কালের বিবর্তনে সেটি মরা নদীতে পরিণত হয় এবং জোয়ারভাটা বন্ধ হয়ে শুরু হয় এলাকায় জলাবদ্ধতা। এই জলাবদ্ধতার নিরসনে সরকার ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কপোতাক্ষ খনন প্রকল্প গ্রহণ করে এবং তা বাস্তবায়ন করে। খননের সময় নদীর দুইপাশ দিয়ে বেড়িবাঁধ দেওয়া হয়। জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পায় এলাকার মানুষ। বলরামপুর ব্রিজের মাথায় লোকালয়ের মধ্যে গড়ে তুলেছে সানি ইটভাটা। ভাটার মালিক আঃ খালেক এই সরকারি জায়গা থেকে বেড়িবাঁধের মাটি কেটে পুকুর খনন করে। এবং নদীর পাশে ছোট্ট একটি বেড়িবাঁধ নামমাত্র দিয়ে রাখে। বর্ষামৌসুম শুরু হলে প্রতিবছর এই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জনবসতি এলাকায় পানি বন্ধি হয়ে পড়ে শতশত পরিবার। তারই ধারাবাহিকতায় জুলাই মাসের প্রথমে বেড়িবাঁধটি ভেঙ্গে যায়। তখন এলাকাবাসী স্থানীয় তহশীলদারকে অবহিত করলে তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং ১৮ জুলাই সরকারি মাপজরিপের ঘোষণা করেন।
গত ১৮ জুলাই বুধবার সকালে সাতক্ষীরা-১(তালা-কলারোয়া) সংসদ সদস্য এ্যড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিমেষ বিশ্বাস মাপ জরিপ করে লালফিলাগ দিয়ে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দখল মুক্ত করে। তিনি এই ভূমি দস্যু খালেক এর বিরুদ্ধে তালা থানায় একটি এজাহার দাখিল করে। কিন্তু অদ্যাবধি এই ভুমিদস্যু জামাযাতের অর্থদাতা খালেকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বরং এই ভুমিদস্যু গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বহালতবিয়াতে কপোতাক্ষের ভিতর দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছে। এলাকাবাসী আক্ষেপ করে বলেন, খালেক অনেক টাকার মালিক সে টাকা দিয়ে প্রশাসনের চোখ মুখ বন্ধ করে রেখেছে। যার ফলে প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এব্যাপারে তালা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, থানায় একটি লিখিত আবেদন সহকারী কমিশনার এর কার্যালয় থেকে করেছিলো। তাতে অনেক ভুল ছিলো যেটি সংশোধন করে দেওয়ার কথা কিন্তু অদ্যাবধি তা করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) অনিমেষ বিশ্বাস জানান, মাপ জরিপ করে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে লাল ফিলাগ দিয়ে এসেছিলাম। এব্যাপারে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। পরে ভাটার মালিক ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেছে তারপর কি হয়েছে আমি জানিনা।