অটোরিকশা হারিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস: প্রতিকার পেলেন চালক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নিজের সমস্যার কথা এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে প্রতিকার পেলেন ময়মনসিংহের অটোরিক্সা চালক আব্দুস সামাদ।
সম্প্রতি নিজের অটোরিক্সা হারান অটোচালক সামাদ। কোনো কুলকিনারা না পেয়ে ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করেন প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল নম্বর। পরে সাহায্য চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএমএস করেন তিনি। আর এতেই সমস্যার সমাধান হয় অটোরিক্সা চালকের।
এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। প্রসংশা করেছেন তার উদার মানসিকতার।
তারাকান্দা উপজেলার আব্দুস সামাদ নামের সেই অটো চালক এখন এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
জানা গেছে, গত ২৮ মে গেরেজ থেকে সামাদের অটোরিকশাটি হারিয়ে যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোনো কুলকিনারা করতে না পেরে ইন্টারনেটের আশ্রয় নেন সামাদ। গুগল থেকে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে সাহায্য চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস পাঠান তিনি।
সেই এসএমএসে সাড়া দেন প্রধানমন্ত্রী। নির্দেশ দেন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিষয়টি তদন্ত শেষে আব্দুস সামাদের হাতে নতুন অটোরিকশা তুলে দেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
এরআগে গ্রামের শিক্ষিত যুবকদের পরামর্শ নিয়ে নিজের মোবাইলে ইন্টারনেট থেকে এমপি মন্ত্রীর নাম্বার লিখে গুগলে সার্চ দেন অটোরিকশা চালক সামাদ। এক সময় খোঁজে পান প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল নম্বর।
পরে ‘মা তুমি সারা দেশের মা। আমাকে একটু সাহায্য করুন’ লিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই নম্বরে এসএমএস পাঠান আবদুস সামাদ।
এরপর প্রধানমন্ত্রী অটোরিকশা চালক এম এ সামাদের খুদে বার্তাটি পড়ে তার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়ার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলামকে অটোরিকশা চালক এম এ সামাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানাতে বলা হয়।
ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ পাওয়ার পরই তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এস এ নেওয়াজী এবং তারাকান্দা থানার ওসি মাহবুবুল হককে অটোরিকশা চালক এম এ সামাদকে খুঁজে বের করে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
তাদের তদন্তের ভিত্তিতে জানা যায়, তারাকান্দা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের হাজী সামছুদ্দিনের ছেলে আব্দুস সামাদ একজন অটোচালক। ঘটনার দিন ২৮ মে, রাতে উপজেলার গোয়াতলার শশা বাজারে জুলহাস ফকিরের গ্যারেজে ব্যাটারি চার্জের জন্যে অটোরিকশাটি রেখে যান সামাদ।
পরদিন সকালে গ্যারেজে এসে সামাদ দেখতে পান রিকশাটি সেখানে নেই। অনেক খোঁজাখুজির পর গ্যারেজের মালিককে অটোরিকশা হারানোর ঘটনা জিজ্ঞাসা করলে, তিনি উত্তর দিতে ব্যর্থ হন।
পরে সামাদ তারাকান্দা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ সুপার ২০ জুন গ্যারেজ মালিক জুলহাসকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গ্যারেজ মালিক জুলহাস ফকির, সামাদকে নতুন একটি অটোরিকশা কিনে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম দরিদ্র অটোরিকশা চালক এম এ সামাদের কাছে নতুন এই অটোরিকশা হস্তান্তর করেন।
এলাকাবাসী মনে করছেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও সবকিছুতেই কঠোর নজরদারির প্রমাণ এই ঘটনা। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক নির্দেশনার কারণে সামাদ নতুন অটোরিকশা পেল।